রবিবার | ১৯ মে, ২০২৪

কচুরিপানার কারণে কাপ্তাই হ্রদে নৌ চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে

প্রকাশঃ ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০১:২৮:২৪ | আপডেটঃ ১৮ মে, ২০২৪ ১১:৫২:০৯  |  ৫৮০
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে নৌচলাচলে ভোগান্তি এখন চরমে। যানবাহন আটকে যাচ্ছে জলেভাসা কচুরিপানার কারণে । এতে বিঘ্ন ঘটছে নৌযান চলাচলে। গন্তব্যে পাড়ি দিতে সময় লাগছে দীর্ঘক্ষণ। ফলে যাতায়াতে ভোগান্তি বাড়ছে নৌপথে চলাচল করা লোকজনের। এ নিয়ে নেই স্থায়ী সমাধানের উপায়। দিশেহারা প্রশাসন।

নৌযান শ্রমিক ও যাত্রীরা জানান, কাপ্তাই হ্রদে অতিরিক্ত কচুরিপানার জট বাঁধায় যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। এতে গন্তব্যে পাড়ি দিতে লাগছে দীর্ঘ সময়। ভাসমান জট সরিয়ে যানবাহন চালালেও কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই আবার বাঁধে জট। জেলার নৌপথে যাতায়াতের মাধ্যম সদর, বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর ও বিলাইছড়ি উপজেলায় কাপ্তাই হ্রদজুড়ে বিভিন্ন স্থানে কচুরিপানার জট বেঁধেছে। ফলে এসব এলাকায় নৌপথে যাতায়াতে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে নৌপরিবহণগুলোর।

সরেজমিন দেখা যায়, রাঙামাটি সদরের কাপ্তাই হ্রদের হাজারিবাক, বালুখালী, বন্দুকভাঙা, মগবান, জীবতলীসহ বিভিন্ন স্থানে কচুরিপানার জটে আটকে যাচ্ছে হ্রদে চলাচল করা নৌযানগুলো। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে অনেক দেরিতে। চলাচলকারী যাত্রী, পর্যটক ও মালবাহী লঞ্চ, ইঞ্জচালিত বোট ও স্পিডবোট আটকে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন লোকজন।
বরকল উপজেলার ধামাইছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমল চাকমা বলেন, সরকারি নির্দেশনায় ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে। আমাদের প্রতিদিন স্কুলে যেতে হচ্ছে। কিন্তু কাপ্তাই হ্রদে অতিরিক্ত কচুরিপানার জট বাঁধায় যাতায়াতে মারাত্মক দুর্ভোগ হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে এসব জলেভাসা জঞ্জালের জট সরানোর ব্যবস্থা করা না গেলে জনসাধারণের ভোগান্তি দূর হবে না।

যাত্রীরা বলেন, নৌপথে যাতায়াতকালে হ্রদের মাঝখানে কচুরিপানার জটে নৌকা আটকে গন্তব্যে পৌঁছাতে লাগছে দীর্ঘ সময়। এতে স্বাভাবিক যাত্রা খুব ব্যাহ হচ্ছে।

রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, কাপ্তাই হ্রদে অতিরিক্ত কচুরিপানার জট বেড়েছে। ফলে ইঞ্জিনচালিত নৌকা, লঞ্চ, মালবাহী নৌপরিবহণ, পর্যটকের নৌকাসহ সব ধরনের নৌ চলাচলে বিঘœ ঘটছে। কচুরিপানার জট অতিক্রম করে যাওয়ার পথে নৌযানগুলো আটকে গেলে তা সরাতে ঘন্টার ঘন্টা সময় ক্ষেপন হচ্ছে। অনেক সময় নৌকাগুলোর ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। হ্রদ হতে কচুরিপানার জট সরানো না গেলে দুর্ভোগ বাড়তেই থাকবে। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিএফডিসি, জেলা পরিষদ এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগ নিতে পারত। কিন্তু এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

কাপ্তাই কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের বলেন, কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানার জট সরিয়ে স্থায়ী সমাধান কখনও সম্ভব নয়। ২০১২ সালে কচুরিপানা সরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সম্ভব হয়নি। কারণ জেলেরা মাছ শিকারের জন্য কচুরিপানা দিয়ে জাঁক তৈরি করে জট বাঁধায়। হ্রদে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওইসব জাঁক ছিঁড়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে ভাসমান জঞ্জালের জট বাঁধে। ফলে কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানার দুভোর্ েপড়তে হয় লোকজনকে।

এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানার জঞ্জাল সরানোর স্থায়ী সমাধান কীভাবে করা যায়, তা এখনও সিদ্ধান্তহীনতায়। কচুরিপানা অপসারণের যন্ত্র রাঙামাটিতে নেই। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদেরকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে তারা জানিয়েছেন যে, এসব ভাসমান জঞ্জালের জট সরানো শ্রমিক দিয়েও সম্ভব হবে না। তবে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions