বৃহস্পতিবার | ০৯ মে, ২০২৪
রাঙামাটির লংগদুতে সংযোগ সড়কের না থাকায়

সাতার কেটে ও মই বেয়ে যে সেতু পার হতে হয়

প্রকাশঃ ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:৫১:৫০ | আপডেটঃ ০৪ মে, ২০২৪ ০৮:১৬:৪৪  |  ৯০১
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির লংগদুতে সংযোগ সড়ক না হওয়ায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে স্থানীয়রা। লংগদু উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের করল্যাছড়িবাজার এলাকার মাঝখানে বিচ্ছিন্ন খাল পারাপারের জন্য আট বছর আগে একটি সেতু নির্মাণ করা হলেও সংযোগ রাস্তার কাজ অসমাপ্ত পড়ে আছে। ফলে এতটা বছর ধরে মই দিয়ে ওঠে সেতুটি পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয় লোকজনকে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১-২০১৩ সালে ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সেতু নির্মাণ করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। কিন্তু সেতুর এ পাড় ওপাড় দুই পাশে সংযোগ সড়ক হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে পানিতে সাঁতার দিয়ে আর মই দিয়ে ওঠে সেতু পারাপার হতে হচ্ছে বলে জানান এলাকার লোকজন।

তারা আরো জানান, উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের ডানে আটারকছড়া ও ইয়ারিংছড়িসহ কাছাকাছি  কয়েক গ্রামের অন্তত ৭/৮ হাজার পাহাড়ি বাঙালি জনগোষ্ঠী মানুষের বসবাস। রাস্তা এবং সেতু না থাকায় তাদের কাঁচামাল, জুমে উৎপাদিত ফসলসহ বিভিন্ন পণ্য বাজারে নিয়ে যেতে হয় অত্যন্ত কষ্টসাধ্যে। এতে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তির মধ্যে। কখনও মাথায় আবার কখনও কাঁেধ করে বাজারে নেওয়া-আনা করতে হয় পণ্য। এছাড়া স্কুল শিক্ষার্থী ও রোগীদের পারাপারে পড়তে হয় অসহণীয় দুর্ভোগে। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আটারকছড়া ইউনিয়নের ৪ ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে ওই এলাকার ইয়ারিংছড়ির-করল্যাছড়িবাজার যোগাযোগ স্থাপন করতে ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতুসহ উভয় পথে রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। কিন্তু সেতুটি একই বছরের মধ্যে নির্মাণ করা হলেও আজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক বা রাস্তার নির্মাণকাজ শেষ করেনি বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে সেখানে সেতু নির্মাণ হলেও সেটি কোনো কাজেই আসছে না এলাকার জনগণের। কাজ অসম্পন্ন থাকায় মানুষের দুর্ভোগ রয়েই গেছে। পানি সাতঁরিয়ে মই দিয়ে ৭/৮ ফুট ওপরে উঠে সেতু পারাপার হচ্ছেন এলাকার লোকজন।

লংগদু আটারকছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা  বলছেন, স্থানীয়দের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় না করে অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণ করায় সেটি জনগণের কোনো সুফল আনতে পারেনি।



দুনীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারন সম্পাদক ললিত সি চাকমা চাকমা বলেন, সরকার একটি প্রকল্প নেয় জনগণের সুবিধার্থে ও উন্নয়নের জন্য, কিন্তু প্রকল্পটি যখন সঠিক বাস্তবায়ন হয় না, তখন ধরে নেয়া হয় এটি একটি অনিয়ম।

আটারকছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য জিয়াউর রহমান জানান, ব্রীজের কাশ শেষ হওয়ার আমরা যখন ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারকে জিজ্ঞাসা করি বাকি কাজ শেষ হবে কবে? তারা বলেছেন দ্রুত শেষ হবে, কিন্তু তাদের আজ পর্যন্ত দেখা নেই।
 
এদিকে বিষয়টি নিয়ে কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী এরশাদুল মন্ডলকে দোষারোপ করছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ফিরোজা বেগম চিনু ও রহিম খান। জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহার করা মোবাইল ফোনে কল দিলেও রিসিভ করেননি এরশাদুল মন্ডল।




এ বিষয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুপ্রু চৌধূরী বলেন, এই বিষয়টি তারা জানা ছিলো না এবং ওই সময়ে তিনি দায়িত্বে ছিলেন না। বিষয়টি  বিস্তারিত খোজ খবর নিয়ে  আগামী অর্থবছরে অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার  পদক্ষেপ নিবেন।


রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions