শুক্রবার | ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

লকডাউন আর করোনায় থমকে গেছে বান্দরবানের পর্যটন শিল্প

প্রকাশঃ ২৬ জুলাই, ২০২১ ০১:১৪:৪৯ | আপডেটঃ ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০৪:০০:১৮  |  ৬০৩
কৌশিক দাশ, সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে পর্যটকদের কোলাহল থেমে গেছে,নেই কোন হৈ হুল্লা আর আনন্দ উল্লাস। প্রতি বছর ঈদ, সরকারী ছুটিতে পাহাড়ে পর্যটকদের ভিড় থাকলেও গত দুই বছর পাহাড়ে ভিন্ন চিত্র,নেই কোন পর্যটকের আনাগোনা, এতে করে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমন রোধে গত ১লা এপ্রিল থেকে বান্দরবানে সব পর্যটন কেন্দ্রা দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষনা এবং সকল পর্যটন কেন্দ্র পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন,এর পর লকডাউনের কারণে এখনো বন্ধ জেলার সকল হোটেল-মোটেল এবং পর্যটনকেন্দ্র।

এদিকে  সাড়ে চার মাস যাবৎ হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস বন্ধ থাকায় কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের । ব্যবসায়ীরা মনে করছে দিন দিন লোকসানের পাল্লা ভারী হলেও আয়ের খাত শুন্য। পাশা-পাশি বেকার হয়েছে পড়ছে হাজার হাজার শ্রমিক ও কর্মচারী।

প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে প্রকৃতির নির্মল স্বাদ পেতে পর্যটককের ঢল নামে বান্দরবানে। বান্দরবানের পাহাড়-পর্বত,ঝিরি-ঝর্ণা,নদী আর পর্যটনকেন্দ্রে গুলো ঘুরে মনে আনন্দের পাশাপাশি প্রকৃতির অপরুপ রুপ অবলোকন করতো পর্যটকেরা। কিন্তু এখন সবই ফাঁকা , হোটেল-মোটেল রিসোর্ট এর পাশাপাশি বেকার দিন গুনছে পর্যটন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা।

জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মূল ফটকে লাগানো হয়েছে তালা,আর কর্মচারীরা পার করছেন অলস সময়। পর্যটক না থাকায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বিরাজ করছে শুন্যতা, ফলে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
   
পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত শ্রমিকরা জানান,সাড়ে তিন মাসের উপর হয়ে গেল শ্রমিকদের গাড়ীর চাকা বন্ধ রয়েছে। গাড়িগুলোর মালিক ও শ্রমিকরা পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল এবং তাদের মাধ্যমে আয় রোজগার। গাড়ী বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কষ্টে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে অনেকইে, ভবিষ্যতে শ্রমিকদের ভাগ্য কি হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় অনেকেই।

বান্দরবান আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন,করোনাকালিন সময়ে প্রথম থেকে এ পর্যন্ত হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিক-কর্মচারিরা  খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছে। মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা,এক কথায় কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে জীবন জীবিকা স্থব্দ হয়ে গেছে।



এদিকে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন,করোনা সংক্রমণ আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে , তাই সাধারণ জনগণকে মহামারি থেকে রক্ষা করা,আর পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে বান্দরবানের পর্যটন কে›ন্দ্রগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, করোনা আর লকডাউনে বান্দরবানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাওয়া ত্রাণ সহায়তা আমরা বিভিন্ন সেক্টরে প্রদান করেছি এবং বিভিন্ন পর্যটন শ্রমিক,পর্যটকবাহী যান এর চালক-হেলপারসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট যারা অসহায় হয়ে দিনযাপন করছে তাদের আমরা ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সহায়তা দিয়ে এসেছি ,আর যদি কেউ না খেয়ে কষ্ট পায় তবে জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। জেলা প্রশাসক আরো বলেন,করোনার প্রকোপ কমে গেলে আবারও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী সিদ্বান্ত নিয়ে প্রশাসন জেলার সকল পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেবে আর নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াবে জেলার পর্যটনশিল্প।

বান্দরবান |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions