শুক্রবার | ০৩ মে, ২০২৪
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র

সর্বনিম্ন উৎপাদনে দেশের একমাত্র জল বিদ্যুৎকেন্দ্র

প্রকাশঃ ৩০ মার্চ, ২০২৪ ০৯:২৮:২০ | আপডেটঃ ০৩ মে, ২০২৪ ০২:৫৪:৪৫  |  ৩০৭
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় সর্বনিম্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। দেশের একমাত্র এই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পাঁচটি ইউনিটে দৈনিক ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে কেবল ৩০ মেগাওয়াট। চলতি মার্চ মাসের শুরুতেও ৪০ মেগাওয়াট উৎপাদন করা গেলেও এখন ৩০ মেগাওয়াটে নেমেছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা বলছেন, কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে যে পরিমাণ পানি রয়েছে সে অনুযায়ী দুইটি ইউনিটে ৪০-৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। কিন্তু ৪০-৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলে শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকটে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ের যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যে কারণে সারা বছরজুড়েই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন অব্যাহত রাখার লক্ষে একটি ইউনিটে ৩০ মেগাওয়াট উৎপাদন করা হচ্ছে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গিয়েছে, কাপ্তাই হ্রদের পানির পরিমাপের রুল কার্ড অনুযায়ী শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে ৮০ দশমিক ৮ মিনস্ সি লেভেল (এমএসএল) পানি রয়েছে। যদিও স্বাভাবিকভাবে পানির থাকার কথা ৮৮ দশমিক ৫১ এমএসএল। রুল কার্ডের হিসেবেই বর্তমানে ৮ এমএসএল পানি কম রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত ও বিকল্প উৎস থেকে (উজান) পানি না আসলে হ্রদে পানি বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। গতকালের তথ্যমতে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে কেবল ২ নম্বর ইউনিট ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

জানতে চাইলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, ‘আমাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে একটি ইউনিট সচল রয়েছে। এক ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৩০ মেগাওয়াট। কাপ্তাই হ্রদে পানি কম থাকায় আপাতত আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো কিংবা কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন তো অনেক কম। এর চেয়ে উৎপাদন কমানোর আর কী সুযোগ আছে।’

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-বিপিডিবির দৈনিক উৎপাদন রেকর্ড অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চের শুরুতেও দৈনিক ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত করা হতো কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। সর্বশেষ গত ৮ মার্চ ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছিল দেশের একমাত্র জল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। বিগত ৯ মার্চ থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি উৎপাদন ইউনিটের মধ্যে কেবলমাত্র একটি ইউনিট দিয়েই ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পাঁচ ইউনিটে ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহের থেকে সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ মাত্র ৩০-৪০ পয়সাএ এত স্বল্পমূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হওয়াতে উৎপাদনের দিকে সাশ্রয়ী ভূমিকা রেখে আসছে কেন্দ্রটি।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দায়িত্বশীল একজন প্রকৌশলী জানান, গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে পরিমাণ উৎপাদন ব্যয় হয়ে থাকে; সেটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে অনেক বেশি। জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যয় বহুকাংশে সাশ্রয়ী, মাত্র ৪০ পয়সা। যে কারণে এটিকে উৎপাদন বাড়ানো গেলে ব্যয় কম হয় থাকে বিপিডিবির। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকার কারণে আমরা কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছি। দুইটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ থাকলেও পানি সংরক্ষণ করে যাতে করে বছরজুড়ে উৎপাদন করা যায় সেজন্য একটি ইউনিটে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।

রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions