রবিবার | ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

বান্দরবানে বাড়ছে তুলার আবাদ

প্রকাশঃ ১৯ মার্চ, ২০২৪ ০২:৩৩:৫৪ | আপডেটঃ ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০৫:০৪:০৩  |  ২০৬
কৌশিক দাশ, সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তামাকের জমিতেই চাষ হচ্ছে তুলা। পাহাড়ে জুম চাষের পাশাপাশি তুলার ফলন ভালো হওয়ায় চাষীদের জীবনে ফিরে এসেছে স্বচ্ছলতা। তুলা উন্নয়ন বোর্ড বলছে, এবছর বান্দরবানে ৫হাজার ৮শত ৭৮হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়েছে আর তার বিপরীতে উৎপাদন হতে পারে ১৫২৮মেট্টিক টন তুলা। গবেষকরা বলছেন, উন্নত জাতের তুলা চাষের সঠিক পরিচর্যা করা গেলে উৎপাদন বাড়বে আরো কয়েকগুণ।


বান্দরবানের বিভিন্ন পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে একসময় ব্যাঁপকহারে চাষ হতো ক্ষতিকর তামাক চাষ, তবে এখন সেই জমিতে তামাক চাষ বাদ দিয়ে কৃষকরা আবাদ করছে অর্থকরী ফলস তুলা। জেলার মেঘলা,চিম্বুক,চড়–ইপাড়া,লেমুঝিড়ি,বালাঘাটা জয় মোহন পাড়াসহ বিভিন্ন পাড়ায় চলছে এই তুলার আবাদ। বান্দরবানের ৭টি উপজেলার বিভিন্ন জমি থেকে এখন তুলা উত্তোলন শুরু করে দিয়েছে চাষীরা, জুম চাষীরা দেশী তুলার পাশাপাশি হাইব্রিড তুলা চাষে ফলন ভাল পাওয়ায় লাভবান হচ্ছে আর্থিকভাবে।

বান্দরবান সদরের চড়–ইপাড়া এলাকার তুলা চাষী মং সাচিং মারমা বলেন, এক সময়ে আমাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতো, কিন্তু বর্তমানে তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বান্দরবান জোন এর সহায়তার মাধ্যমে আমরা তুলা আবাদ করেছি এবং ভালো লাভবান হচ্ছি।

জেলা সদরের বালাঘাটা বাজারের তুলা চাষী অং হ্লা মং মারমা বলেন, এক সময়ে পাহাড়ের পাদদেশে আর নদীর পাড়ে তামাক চাষ করতাম, তবে লাভ কম হতো এবং শরীরের ক্ষতি হতো এখন তুলা চাষ করছি পরিশ্রম কম হচ্ছে সেই সাথে সাথে সাথী ফসল হিসেবে তুলার সাথে সাথে সীম,টমোটোসহ কয়েক রকম সবজি আবাদ করে লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছি।

তুলা উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান জোনের তথ্যমতে, ২০২২-২৩ মৌসুমে বান্দরবানে ৫হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়েছিল আর যার বিপরীতে ১০৯২মেট্টিক টন তুলা উৎপাদন হয়েছিল আর ২৩-২৪ মৌসুমে বান্দরবানে ৫ হাজার ৮ শত ৭৮ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়েছে যার বিপরীতে ১৫২৮মেট্টিক টন  তুলা উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ করছে সংশ্লিষ্টরা।

 
তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বান্দরবান জোন এর প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: আলমগীর হোসেন মিধা বলেন, ২০২৩-২৪ মৌসুমে বান্দরবানে ১ হাজার ৫০জন চাষী তুলা উন্নয়ন বোর্ডের প্রশিক্ষণ নিয়ে তুলা উৎপাদন করছে, প্রশিক্ষনে চাষীদেরকে তুলা উৎপাদন,সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের ওপর ব্যাপক ধারণা দেওয়া হচ্ছে। একসময় চাষীরা পাহাড়ে শুধু তামাক চাষ করে জীবনধারণ করলে ও সময়ের সাথে সাথে এখন তুলা চাষে লাভ বেশি হওয়ায় অনেক চাষীই তুলা চাষ করছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বান্দরবান জোন এর প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: আলমগীর হোসেন মিধা আরো বলেন, বান্দরবানে তুলার উন্নয়নে চাষীদের প্রশিক্ষণ,সমাবেশসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে আর তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন। তিনি আরো বলেন, বান্দরবানে প্রতিমণ বীজতুলার দাম এবার ৩৮০০ টাকা।

পাহাড়ী তুলা গবেষণা কেন্দ্র,বান্দরবানের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও অফিস প্রধান মংসানু মার্মা জানান, তুলার মান উন্নয়নে বান্দরবানের পাহাড়ী তুলা গবেষণা কেন্দ্রে বিভিন্ন জাতের তুলার গবেষণা চলমান রয়েছে। এই তুলা গবেষণা কেন্দ্রে বর্তমানে এইচসি ১,২,৩ এবং সিবি ১২,১৩,১৪,১৫ সিবি হাইব্রিড-১ এবং টার্কি থেকে ১২টি জাতের তুলার গবেষনা চলমান রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সঠিকভাবে তুলা রোপন ও পরিচর্যা করা গেলে প্রচুর পরিমানে উৎপাদন হবে আর সেই তুলা বিক্রি করে চাষীরা আরো অধিক লাভবান হবে।


বান্দরবান |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions