বৃহস্পতিবার | ২৮ মার্চ, ২০২৪
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে

রাঙামাটিতে পর্যটকদের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি

প্রকাশঃ ১৫ জুন, ২০১৮ ০২:০৩:১৯ | আপডেটঃ ২৮ মার্চ, ২০২৪ ০৯:৫৭:২৭  |  ১৩৮০
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি শহরের প্রধান আকর্ষন হলো ঝুলন্ত সেতু। সাধারণত রাঙামাটি এসে এই ঝুলন্ত সেতুটি না দেখে কেউ ফেরত যায় না। রাঙামাটি শহরের শেষ প্রান্তে কাপ্তাই লেকের একাংশে ৩৩৫ ফুট লম্বা এই ব্রিজটি  পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষনীয় স্পট। এ সেতুকে বলা হয়, রাঙামাটির আইকন। নয়নাভিরাম এই ঝুলন্ত সেতুটি দুইটি বিচ্ছিন্ন পাহাড়ের মধ্যে গড়ে দিয়েছে হৃদ্দিক সম্পর্ক। সেতুটি পারাপারের সময় সৃষ্ট কাঁপুনি আপনাকে এনে দেবে ভিন্ন ধরণের আমেজ। এখানে দাঁড়িয়ে কাপ্তাই হ্রদের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে পারবেন। কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্যে আপনি মুগ্ধ হতে বাধ্য।

প্রতি বছর রাঙামাটি শহরে ঈদকে ঘিরে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে। এবার ঈদকে ঘিরে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকবে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা। গত বছর পাহাড় ধ্বসের পর এবারো নানিয়াচরে পাহাড় ধব্বসে ১১জন নিহত হওয়া এবং ঝড় বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ব্যবসায়ীরা পর্যটকের আগমন নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। গত বছর পাহাড় ধব্বসের কারনে ভয়ে আতঙ্কে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছিল পর্যটন শহর রাঙামাটি। পর্যটক শূন্যতার কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে রাঙামাটি। কয়েক মাস লোকসান গুনতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। হতাশ হয়ে পড়েছিল পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু শীতের ভরা পর্যটন মৌসুমে হঠাৎ পাহাড় ধ্বসের বিপর্যয় কাটিয়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে ছিল পাহাড়ের পর্যটন শিল্প রাঙামাটি।

আসন্ন ঈদে ব্যবসায়ীরা আশা করেন, ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের আনাগোনা বাড়বে রাঙামাটির দর্শনীয় স্থানগুলোতে। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে চাঙ্গা হয়ে উঠছে পাহাড়ের অর্থনীতিও। এবার তারা আশাবাদী ঈদকে ঘিরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে পাহাড়ী কন্যা রাঙামাটিতে বেড়ানোর জন্য অনেকে ছুটে আসবেন দূর দুরান্ত থেকে হাজারো পর্যটক।

স্বাভাবিকভাবে প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে রাঙামাটিতে হাজারো পর্যটকের ভিড় থাকে। পর্যটকের  পদচারণায় ঝুলন্ত ব্রিজের কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দুর-দুরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের মাঝে যেন আনন্দের কমতি থাকে না।


রাঙামাটিতে এবার ঈদকে ঘিরে হোটেল-মোটেল ও বোট ব্যবসায়ীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, প্রতি বছররের মত পর্যটকদের বরণ করে নিতে আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।  

রাঙামাটি পর্যটনের বোট ব্যবসায়ী মোঃ আল্লাউদ্দিন টুটুল বলেছেন, বোটের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে ও ঝুকি কমাতে আমরা পুরোনো বোটগুলোকে মেরামত ও রঙের কাজ করেছি।

গত বছর পাহাড় ধ্বসের কারণে রাঙামাটিতে পর্যটক না আসাতে আমরা ব্যাপক লোকসানে পড়েছিলাম। হতাশ হয়ে পড়েছিলাম কিন্তু শীতের ভরা পর্যটন মৌসুমে রাঙামাটি পর্যটকের আনাগোনা বেড়াতে কিছুটা লোকসান কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি।

আমরা আশাবাদী, এবারের ঈদে প্রচুর পরিমাণে পর্যটকদের সমাগম হবে রাঙামাটিতে। এ বছর পুরোপুরি ভাবে পাহাড় ধ্বসের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারবো।

হোটেল মতি মহলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজম জানান, ঈদের মৌসুমে পর্যটকের আগমন বেশ বড় আকারে সাড়া পাবো বলে আমরা ধারণা করছি।  সেই ধারণাকে সামনে রেখে আমরা হোটেলে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির কাজ ও ডিসকাউন্ট রেখেছি। ইতিমধ্যে আমাদের আমাদের হোটেলের ৫০% বুকিং হয়ে গেছে। বর্তমানের মত পর্যটকের আগমন অব্যহত থাকলে আমরা ঈদ পর্যটক মৌসুমে ব্যাপক লাভবান হবো।

তবে তিনি হোটেল মালিকের পক্ষ থেকে বলেন, রাঙামাটিতে পর্যটন স্পটগুলোতে আরো সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি, বাড়তি সুযোগ-সুবিধাসহ পর্যটন স্পট আরা বৃদ্ধি করলে পর্যটকের আগমন আরো বাড়বে। তাই তিনি প্রশাসনকে পর্যটনের এসব খাতে নজর দেওয়া তাগিদ দেন।

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়–য়া সিএইচটি টুডে ডট কম কে জানান, আমাদের হোটেল-মোটেল এ এখন পর্যন্ত তেমন বুকিং হয়নি যা হয়েছে তা একেবারে স্বল্প পরিমাণ। হোটেল-মোটেলে পর্যটকদের জন্য বাড়তি সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ঈদ মৌসুমে পর্যটনদের জন্য প্রত্যেক রুমের ভাড়া হ্রাস করেছি। এছাড়াও ২০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিয়েছি।

আমরা আশাবাদী ঈদের মৌসুমে পর্যটকদের সমাগমে উপচে পড়া ভিড় থাকবে পর্যটন কমপ্লেক্সে ও বুলন্ত ব্রিজে। সব মিলিয়ে আমরা পর্যটকের ব্যাপক সাড়া পাবো। অতিতের লোকসান কাটিয়ে একটু আলোর মুখ দেখতে পাবে আশা ব্যাক্ত করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, পর্যটন কমপ্লেক্সের আশে-পাশে ও ব্রিজের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য আমরা পর্যটন বিকাশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আমরা আশাবাদী সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির করণীয় পদেক্ষেপ গ্রহন করবেন সংশিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

রাঙামাটিতে দেখার মত রয়েছে নয়নাভিরাম বিশাল কাপ্তাই হ্রদ, সুবলং প্রাকৃতিক ঝর্ণা, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুর রউফের স্মৃতি সৌধ, পর্যটন মোটেল, ঝুলন্ত ব্রীজ,  কাপ্তাই বাঁধ, কাপ্তাই হাইড্রো ইলেকট্রিক প্রজেক্ট, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যোণ, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, রাজবাড়ি, রাজবন বিহার, উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট, উপজাতীয় যাদুঘর, জেলা প্রশাসকের বাংলো, ঐতিহ্যবাহী জুম্ম ক্ষেতসহ অসংখ্য আদিবাসী গ্রাম এবং আদিবাসীদের বৈচিত্রপূর্ণ বর্ণাঢ্য জীবনধারা।  

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions