রাঙামাটিতে রেকর্ডীয় জমি জবর দখলের অভিযোগ আইনজীবির বিরুদ্ধে

প্রকাশঃ ১৭ অক্টোবর, ২০২১ ০১:৪৩:৫১ | আপডেটঃ ১৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০৭:০৯:১৬
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি শহরের তবলছড়ি এলাকায় নিজ নামীয় জায়গা দখল করে ইট বালু কংকর রেখে জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে রাঙামাটির এক আইনজীবির বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী পরিবার আজ রাঙামাটি শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন।

শহরের তবলছড়ির স্বর্ণটিলা এলাকায় নিজেদের নামে রেকর্ডীয় দুই একর জায়গা স্থানীয় চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা জবরদখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন, নিগার সুলতানা নামে এক জমির মালিক। শনিবার সকালে শহরের বনরুপার ক্যাফেলিংক নামে একটি রেস্তোরায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় তার স্বামী ইব্রাহিম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মামলা হয়েছে আদালত ও থানা পুলিশে।

সংবাদ সম্মেলনে বর্ণনা করা অভিযোগে নিগার সুলতানা বলেন, আমার মরহুম বাবা মো. মনোয়ার একজন সরকারি চাকরিজীবী ও পরবর্তীতে প্রথম শ্রেণীরর ঠিকাদার ছিলেন। আমার জন্মস্থান রাঙামাটি। আমার বাবা ১৯৮৯ সালের ৩০ মে (৬৬১/৭৮-৭৯নং) রেজিষ্ট্রেশনযুক্ত দলিলমূলে রাঙামাটি সদর উপজেলার তবলছড়ির স্বর্ণটিলা নিবাসী আব্দুল জব্বার সওদাগর হতে চৌহাদ্দী উল্লেখপূর্বক দুই একর রেকর্ডীয় জায়গা ক্রয় করেন। পরে জায়গাটি বাবার নামে মিউটিশন মামলা (নং- ৮৭৪ (ডি) মূলে পৃথক নামজারী হোল্ডিং আর-৪৫/ক সৃজন করে খাজনা আদায় করা হয়। সেই থেকে  ক্রয়সূত্রে নিজ জায়গা ভোগদখল করে আসছিলেন বাবা। ২০১১ সালে বাবা মৃত্যুবরণ করলে আমরা উত্তরসুরিরা প্রত্যেকের নামে পৃথক নামজারী হোল্ডিং রেকর্ডভূক্ত করি। বর্তমান হাল নাগাদ খাজনা পরিশোধ করি।     

১১ অক্টোবর আমাদের নামীয় রেকর্ডীয় জায়গার নামজারী হোল্ডিং মোতাবেক খাজনা পরিশোধ করতে গেলে গোপনে জানতে পারি যে, আমাদের রেকর্ডীয় নামীয় জায়গায় রাঙামাটি সদর উপজেলার তবলছড়ি স্বর্ণটিলার স্থানীয় ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী ও অ্যাডভোকেট পরিচয়ধারী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ও সালাউদ্দীন গং ইট, বালু, কংকর ইত্যাদি মজুত করেছে। এতে আমরা হতভম্ব হয়ে পড়ি। তাৎক্ষণিক আমাদের কেয়ারটেকারকে সঙ্গে নিয়ে আমি ও আমার স্বামী সরেজমিন গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই।

এরপর ১২ অক্টোবর রাঙামাটির বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে মিচ মামলা (নং-১৩৪/২১) করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ভবিষ্যতে ওই জায়গার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে জাহিদ ও সালাউদ্দীন গং। থানা কর্তৃপক্ষ নোটিশের মাধ্যমে উল্লেখিত দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিরোধীয় জমিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে সব ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও মারামারি না করার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু এরপরও জাহিদ, সালাহ উদ্দীন গং আদালত ও থানা পুলিশের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ১৪ অক্টোবর পুনরায় বিরোধীয় জায়গায় সন্ত্রাসী কায়দায় অনুপ্রবেশ করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা চালায়। এতে আমরা বাধা দেওয়ায় প্রাণনাশসহ নানা ধরনের হুমকি দেয় আসামিরা।

আমরা বর্তমানে ভয়ভীতির মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। আসামিদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, নিগার সুলতানা ও তার স্বামী ইব্রাহিম চৌধুরী।

রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

অপরদিকে প্রতিপক্ষ জাহিদু ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে এ ধরনের বিরোধ আমার কারও সঙ্গে নেই। নিগার সুলতানা নামে কাউকে চিনিও না। কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে অহেতুক কোনো মিথ্যা অভিযোগ করে থাকে, তাহলে তা আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে।



সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions