প্রকাশঃ ২৯ জুলাই, ২০২১ ০৭:২৪:০৪
| আপডেটঃ ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০৬:৩১:৩৫
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে জেলার সাংগু ও মাতামুহুরী নদীতে পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলের কয়েক শত ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে, অবিরাম বৃষ্টি হলে আরো ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এদিকে প্রধান সড়কে পানি ওঠায় বান্দরবানের সাথে লামা,আলীকদম,রোয়াংছড়ি ও নাইক্ষংছড়ির ঘুমঘুমের সড়ক যোগাযোগ হয়ে পড়েছে বিছিন্ন।
কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন নিম্মাঞ্চল ডুবে গেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বান্দরবান পৌরসভার উজানীপাড়া, সমিল এলাকা,বরিশাল পাড়া,আর্মি পাড়া,লাঙ্গি পাড়া,কাশেমপাড়া,ছাইঙ্গা দানেশপাড়া,ওয়াপদাব্রীজ এলাকাসহ বিভিন্ন নিম্মাঞ্চল এলাকা।
এদিকে সড়কে পানি ওঠায় বান্দরবানের সাথে লামা,আলীকদম,রোয়াংছড়ি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ হয়ে পড়েছে বিছিন্ন। পানিতে ডুবে গেছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শিবির। টানা বৃষ্টিতে কোথাও কোথাও পাহাড় ধস আর সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
বান্দরবান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো.সাদেক জানান,কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বান্দরবানের বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে বাড়ীতে পানি ঢুকে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। গত দুইদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা প¬াবিত হলেও বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) ভোররাত থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় উজানের পানি ঢুকে পড়েছে। পানিবন্দী এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে প্রশাসন কাজ করছে। জেলায় খোলা হয়েছে ১৪০টি আশ্রয় কেন্দ্র। বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সাঙ্গু নদীর পানির স্কেল ১৩.২০ ফুট। যার বিপদ সীমা হচ্ছে ১৫.৭৫ ফুট। বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার রাত থেকে রুমা, থানচিতে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ায় সাঙ্গু নদীর পানি বৃদ্ধি পায়, এতে নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে গেল কয়েকদিনের বৃষ্টির পর বুধবার বিকেল থেকে বান্দরবানের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানসহ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে সাধারণ মানুষ। পরিবার পরিজন নিয়ে গাঁদাগাদি করে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে নারী পুরুষ ও শিশুরা।
এদিকে জেলায় পাহাড় ধসে প্রাণহানীরোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সতর্কতা করার পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণস্থানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে জনসাধাণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে আহবান জানাচ্ছে প্রশাসন।
বান্দরবন পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী,কোভিড -১৯ চলাকালে আরেকটি বিপর্যয় বান্দরবানে নেমে এসেছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে জনগণকে বর্তমান এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। বান্দরবান পৌরসভায় ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং সেখানে অবস্থানরতদের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বান্দরবানে বন্যাকবলিত মানুষদের আশ্রয়ের জন্য পুরো জেলায় ১৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে আর যার মধ্যে বান্দরবান পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে প্রস্তুত করা হয়েছে ২০টি।