পার্বত্য অঞ্চলে খাদ্য ও আবাসস্থল সংকটে বিপন্ন বন্যহাতি

প্রকাশঃ ০৮ মে, ২০২১ ১২:৫৫:১৮ | আপডেটঃ ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:৪৬:০৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। নির্বিচারে বনভূমি উজাড় করায় পার্বত্য অঞ্চলে খাদ্য ও আবাসস্থল সংকটে বিপণœ বন্যহাতি। ফলে প্রায় সময় লোকালয়ে ঢুকে মানুষের ওপর আক্রমণ করছে হাতি। এতে অনেক জনের প্রাণহানি ঘটছে। বিভিন্ন এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণের আশঙ্কায় জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে মানুষ।

গত এক বছরে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই, রাজস্থলী ও লংগদু উপজেলায় বন্যহাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন আট জন। তাদের মধ্যে সর্বশেষ ১১ মার্চ কাপ্তাই বেড়াতে গিয়ে বন্যহাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যলয়ের মেধাবি শিক্ষার্থী অভিষেক পাল। বন বিভাগ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সরকারি তথ্য মতে, গত এক বছরে বন্যহাতির আক্রমণে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাইয়ে ৩ জন, লংগদুতে ৩ জন এবং রাজস্থলীতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের হিসাব মতে এ সংখ্যা আরও বেশি। স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় সময় জঙ্গল ছেড়ে পাড়া-মহল্লায় ঢুকছে বন্যহাতি। বন্যহাতির আতঙ্কে অনেক মানুষ জন। হাতির করিডোর বা আবাসস্থলগুলোতে স্থাপনা নির্মাণ করছে মানুষ। ফলে হাতির বিচরণের জায়গা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে মানুষের ক্ষতি করতে শুরু করছে হাতি। যেসব এলাকায় হাতি বিচরণ করতো সেইসব স্থানে গড়ে উঠেছে স্থাপনা ও পিকনিক স্পট। অন্যদিকে হাতির খাবারও সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে এখন হাতি মরিয়া হয়ে উঠেছে। সবুজ বনভূমি বর্তমানে ন্যাড়া পাহাড় হয়ে গেছে।

রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. সুবেদার আলী বলেন,  রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই, রাজস্থলী ও লংগদু- এ তিনটি উপজেলাতে আনুমানিক ৬০-৭০টি বন্যহাতি থাকতে পারে। তবে হাতি নিরুপনে বন বিভাগের সঠিক তথ্য জানা নেই। হাতির খাবার নিয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে বন বিভাগ। প্রকল্পটি শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে। এ ছাড়াও হাতি যেসব এলাকায় চলাফেরা করে ওইসব এলাকায় বেষ্টুনি দিয়ে ওই সীমানা রেখার মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে  সোলার ফেন্সিং করার পরিকল্পনা রয়েছে, হাতি যাতে বৈদ্যুতিক শর্ট খেয়ে পিছু হটে। এতে করে হাতি আর মানুষের ক্ষতি করতে পারবে না।

পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ রফিকুজ্জামান শাহ বলেন, কাপ্তাইয়ে রাস্তায় হাতির করিডোরের মধ্যে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। যার জন্য হাতির সঙ্গে মানুষের দ্বন্ধ শুরু হয়েছে। বন্যহাতি বিচরণের জায়গাগুলো মানুষের দখলে চলে গেছে। ফলে আবাসস্থল ও খাদ্য সংকটে হাতি এখন মরিয়া। তাই হাতি যাতে লোকালয়ে ঢুকতে না পারে সেজন্য হাতির খাবার ও আবাসস্থল তৈরির জন্য বন বিভাগ বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।


সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions