পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব শুরু

প্রকাশঃ ১১ জানুয়ারী, ২০২১ ১২:১৮:৫৫ | আপডেটঃ ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৮:৪২:০৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটি চিংলা মং মারি ষ্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন সোনার বাংলা সৃষ্টি করতে হলে সোনার মানুষ হতে হবে। আর আজকের নতুন প্রজন্ম হচ্ছে সোনার বাংলা সৃষ্টি করার হাতিয়ার। ইচ্ছার শক্তিকে বাড়াতে হবে। শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার উপর খুব জোর দিয়েছেন। আগের বাজেটে আট হাজার কোটি টাকা আর এখন সেটা প্রায় আশি হাজার কোটি টাকা। শুধু শিক্ষা নয় সেই সাথে প্রযুক্তির প্রতিও জোর দিয়েছেন। প্রযুক্তির ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। প্রযুক্তির  ফলে ঘরে কাজের সুযোগ তৈরী হচ্ছে। আঙ্গুল দিয়ে টিপ দিলে সারা বিশে^র খরচ পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল।

আজ সোমবার (১১ জানুয়ারী ২০২০) সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়োজিত মন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন এমপি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব ২০২১ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ একটি হচ্ছে মানুষ আর অন্যটি পাহাড় পর্বত, নদীনালা ও খালবিল। এ সম্পদকে যদি আমরা যথার্থভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবা না।আমরা যদি এ দুটো সম্পদকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারি তাহলে আমার বিশ^াস অবশ্যই বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্ন সোনার বাংলা এসডিজি লক্ষ্য ২০৪১ সালে আমরা অর্জন করতে পারব।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি বলেন, অ্যাডভেঞ্চার শব্দের সাথে জড়িত আছে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সাহস নতুনকে জানার ইচ্ছা জীবনকে জানার ইচ্ছা দুনিয়াকে জানার ইচ্ছা আর মানুষকে জানার ইচ্ছা। এ ইচ্ছা তাগিদ থেকে মানুষ অনেক সাহসী ভূমিকা রেখেছে।

এছাড়া রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক, রাঙামাটি পুলিশ সুপার বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল বিশেষ বৈশিষ্ট্য মন্ডীত এলাকা হিসেবে তিন পার্বত্য জেলায় গত বছর আজকের এইদিনে ৫দিন ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বঙ্গবন্ধু জাতীয় অ্যাডভেঞ্চার উৎসব ২০২০ আয়োজন করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি ছিল সর্ব প্রথম বৃহত্তর পরিসরের অনুষ্ঠান। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব ২০২১ ২য় বারের মতো এ ব্যাতীক্রম অ্যাডভেঞ্চারধর্মী ক্রীড়া অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব সত্যি এই এলাকার জন্য বাংলাদেশের জন্য এবং সারা বিশে^র জন্য একটি দৃষ্টান্ত অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতেও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এধরণের অ্যাডভেঞ্চার উৎসব আয়োজন করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন এবং তিন পার্বত্য জেলায় অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব ২০২১ সফল বাস্তবায়নের জন্য সবধরণের সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে জানান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোঃ নূরুল আলম নিজামী (অতিরিক্তসচিব), ভাইস চেয়ারম্যান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব ২০২১ উদযাপন উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ/দপ্তর/ সংস্থাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। মাননীয় মন্ত্রী প্রতি বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, রাঙামাটিতে এই প্রথম রাষ্ট্রের কোন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রামের অ্যাডভেঞ্চার অনুষ্ঠান আসছেন এটি ইতিহাস হয়ে থাকবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের সভাপতি নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ও ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃইফতেকুর রহমান, পিএসসি, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেন।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে তিন পার্বত্য জেলায় বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

অ্যাডভেঞ্চার ফেস্টিভলে রয়েছে পর্বতারোহণ, নৌবিহার, কায়াকিং, হাইকিং ও ট্রেইলরান, টিমবিল্ডিং, ট্রেজারহান্ট, ট্রেকিং, ক্যানিওনিং,  ট্রি ট্রেইল, রোপ কোর্স, মাউন্টেইনবাইক, জিপলাইন, রেপলিং, দর্শনীয় স্থানপরিদর্শন ও কেভডিসকভারী এবং ক্যাম্পফায়ার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইভেন্টসমূহ।

১১ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব চলবে। প্রতিযোগিতায় তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় হতে ৫০ জন ও সমতল থেকে ৫০জন সর্বমোট ১০০জন যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী অ্যাডভেঞ্চারার বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করছে। আগামী ১৫ জানুয়ারী চিংহ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions