খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবিতে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশঃ ১৬ অক্টোবর, ২০২০ ০৬:২৭:০৫ | আপডেটঃ ২৮ মার্চ, ২০২৪ ০১:৪৪:০১
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে দেশের সকল নাগরিকের জন্য জীবিকার নিশ্চয়তা এবং খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার নিশ্চিত করার জন্য খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে বান্দরবানের এনজিও সংস্থা বিএনকেএস এবং খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), বাংলাদেশ।

১৬ অক্টোবর (শুক্রবার) সকালে বান্দরবানের সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন,‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে খাদ্যকে জীবন ধারণের মৌলিক চাহিদা হিসাবে চিহ্নিত করা হলেও ২০১৯ সালের বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে ১১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮৩তম অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে গবেষকরা বলছে, করোনা মহামারী লকডাউন সময়ে দেশের প্রায় ৯৮.৩ শতাংশ দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় ৮৭ শতাংশ দরিদ্র মানুষ পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্য সঙ্কটে ভুগেছে। এছাড়া বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বলছে, দেশের পরিবার গুলোর আয় ২০.২৪ শতাংশ কমেছে। তাই দেশের সকল মানুষের জীবিকা, সংস্কৃতিভেদে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য এখনই জাতিসংঘ কৃষি ও খাদ্য সংস্থার ভলেন্টারি গাইডলাইনের আলোকে দেশে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করা জরুরি। এই আইন প্রণীত হলে সকল মানুষের খাদ্য ক্রয়ের জন্য আয়, খাদ্যের যোগান এবং সংস্কৃতি ভেদে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের আইনী বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী ২০২৬ সালে খাদ্য অধিকার বিষয়ক আইন প্রণয়নের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো থেকে এখন পর্যন্ত কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা এই আইন অবিলম্বে প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছি।’

বিএনকেএস এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর উবানু মারমা এর সঞ্চালনায় কর্মসূচী পরিচালক পেশল চাকমা সভাপতিত্বে এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান য়ই সা প্রু মারমা।

এসময় সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ওমর ফারুক, ২নং কুহালং ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান সানুপ্রু মারমা, আইনজীবি সারা সুডিপা ইউনুস, গ্রাম প্রধান মংপু কারবারী, কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা ক্যহ্লাউ, বিএনকেএস সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ক্যবাথোয়াই, ইউপি সদস্য অংসাহ্লা মারমা, আয়োজিত কর্মসূচিতে নারী কৃষকদের প্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিকসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনকেএস এর কর্মসূচী পরিচালক পেশল চাকমা জানান, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা অধিকার নেটওর্য়াক (খানি) সহযোগিতায় বান্দরবানের শুধুমাত্র বিএনকেএস এনজিও প্রতিষ্ঠান হিসেবে আয়োজনটি করেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সকল মানুষের জীবিকা, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় জন্য সরকারের কাছে খাদ্যকে শুধুমাত্র মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা না করে একটি পূনাঙ্গ খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।

এসময় সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান য়ই সা প্রু মারমা বলেন, আমাদের দেশে পুষ্টি অধিকারের লিঙ্গ ভিত্তিক বিবেচনায় নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ নারীই কোননা কোন অপুষ্টি জনিত জটিলতায় ভুগছেন। ১৯৯৭ সালে দেশের ৬০ শতাংশ শিশু খর্বাকৃতির ছিল, ২০১৮ সালে তা নেমে আসে ৩১ শতাংশে। তারপরও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খর্বাকৃতির শিশু জন্মের হার এখনও বাংলাদেশে বেশি। এর মূল কারণ শিশুর মায়ের জন্য পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সকল মানুষের খাদ্য এবং পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানাই।


সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions