অবশেষে সেই ভুয়া ‘মেজর’ সুমনের ঠাঁই হলো কারাগারে

প্রকাশঃ ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১২:২৯:৫০ | আপডেটঃ ০২ মে, ২০২৪ ০১:৩৮:৫১
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। চাকরি দেওয়ার ফাঁদ পেতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া ‘চাকরিদাতা’ সেই ভুয়া ‘মেজর’ সুমনের অবশেষে ঠাঁই মিললো কারাগারেই। প্রতারণার দায়ে ‘পাঁচ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড এবং দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত’ হওয়ার ছয় মাসের মাথায় তাকে আটক করে পুলিশ।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) তাকে রাঙামাটি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ.এন.এম. মোরশেদ খান এর আদালতে তোলা হলে তাকে কারাগারে পাঠান। আদেশ দেন আদালত। এর আগে গত ০৯ মার্চ একই আদালত এ দন্ডাদেশ দিয়ে পলাতক সুমনকে গ্রেপ্তার করতে জারি করেন পরোয়ানা।
আদালত সূত্রে জানিয়েছে, মামলার আসামী আবুল হোসেন সুমন(৩০), রাঙামাটি সদর উপজেলার ৬নং বালুখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাপমারা পাহাড় এলাকার বাসিন্দা মোঃ আবু আলমের সন্তান।

শহরতলীর বাসিন্দা সুমন হালফেশন সচেতন আর বাকপটু হওয়ায় নিজেকে পরিচয় দিতেন ‘মেজর’; কখনও র‌্যাব কখনও সেনা বাহিনীর। তবে মাঝে একবার ভুয়া ‘এসপি’ সেজে গণধোলাই শেষে তার ঠাঁই হয়েছিলো জেলে। আর জেল থেকে ফিরেই হয়ে ওঠেন ‘চাকরিদাতা’।
এর সাথে একাধিক মন্ত্রীর ছবির পাশে ফটোশপে নিজের ছবি জুড়ে দিয়ে মানুষকে দেখানোই ছিল তার প্রতারণা ব্যবসার ‘পুঁজি’। এছবি দেখিয়ে চাকুরী দেওয়ার ফাঁদ পেতে অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

তবে এ প্রতারণার ফাঁদকে থামাতে সক্রিয় হন রাঙামাটি শহরের তবলছড়ি নিচের বাজারের বাসিন্দা ভুক্তভোগি মোঃ আব্দুল মাবুদ। প্রতারণা করে অর্থ আতœসাতের মামলাটি দায়ের করেন তিনি। আর এতেই ফেঁসে যান সুমন। প্রতারণামূলক অর্থ আত্মসাৎএর এক মামলায় ‘চাকরিদাতা’ সেই সুমনের পাঁচ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড এবং দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত অনাদায়ে আরো ০৬ (ছয়) মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করেছেন আদালত।

প্রতারণা শিকার মোঃ আব্দুল মাবুদ বলেন, ‘নৌ-বাহিনীতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে প্রতারক সুমন সাড়ে সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সুবিচার পেতে গত ২০১৯ সালের ০৭ মে তিনি রাঙামাটির আদালতে (সি.আর-১৭৭/১৯)  মামলা করি। আজ রায় পেয়ে আমি খুশি’।

আদালত সূত্রে জানাগেছে, প্রতারক আবুল হোসেন সুমন এর বিরুদ্ধে ১৮৬০ সনের পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেন বাদী। বিজ্ঞ আদালত গত ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ খ্রি. তারিখ আসামী আবুল হোসেন এর বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ ধারার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন।

চীফ জুডিসিয়াল আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘সাক্ষীগ্রহণ ও উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আসামী আবুল হোসেন সুমন এর বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪২০ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই বিজ্ঞ আদালত গত ০৯ মার্চ সুমনকে পাঁচ বৎসরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত অনাদায়ে আরো ০৬ (ছয়) মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করেন’।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions