রাঙামাটির বার্মিজ মার্কেটের দোকানি-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন

প্রকাশঃ ০৫ অগাস্ট, ২০২০ ০৭:৫৯:২৫ | আপডেটঃ ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:১১:৫১
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে চরম মানবেতর জীবন কাটছে, রাঙামাটি বার্মিজ টেক্সটাইল মার্কেটের দোকানি ও কর্মচারীদের। করোনার প্রভাবে ব্যবসায় মারাত্মক ধ্বস নামে পর্যটকনির্ভর এ মার্কেটে। এর ফলে চরম অর্থিৈনতক বিপর্যয় নামে দোকান মালিক, ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের। লকডাউনে টানা কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর মার্কেট খুললেও পর্যটক না আসায় এখনও কেনাকাটা নেই। দীর্ঘ ৪-৫ মাস ধরে গুনতে হচ্ছে লোকসান। মার্কেটের দোকানি ও ব্যবসায়ীরা এসব দুঃখ-দুর্দশার কথা জানান।

সরকারি পর্যটন মোটেল যাওয়ার পথে শহরের তবলছড়িতে অবস্থিত বার্মিজ টেক্সটাইল মার্কেট। সেখানে বিক্রি করা হয় পাহাড়িদের তৈরি হস্তশিল্পের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও বিভিন্ন জিনিষপত্র। এখানকার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত এ বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসা-বাণিজ্য। কিন্তু করোনার প্রভাবে এখন মারাত্মক ধ্বস নেমেছে রাঙামাটি বার্মিজ টেক্সটাইল মার্কেটের ব্যবসায়। মার্কেটে রাখা পাহাড়িদের হাতে তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী রফতানি হয় জেলার বাইরেও।

রাঙামাটি বার্মিজ টেক্সটাইল মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ ৪ মাস ধরে রাঙ্গামাটিতে পর্যটক আসছেন না। আমাদের ব্যবসায় সম্পূর্ণ পর্যটকনির্ভর। পর্যটক না আসায় বেচাকেনা কিছুই নেই। লকডাউনে মার্কেট বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। এসব কারণে রাঙামাটি বার্মিজ টেক্সটাইল মার্কেটে ব্যবসার চরম ধ্বস নেমেছে। এ টেক্সটাইল মার্কেটে শতাধিক দোকানে কর্মচারী রয়েছেন প্রায় চারশ’। বর্তমানে এসব দোকানদার ও কর্মচারীরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা কোনো রকম প্রণোদনা বা সহায়তা কিছুই পাইনি। এমন মুহূর্তে সরকারি প্রণোদনা বা স্বল্প সুদে ঋণ ব্যবস্থার দরকার।

মার্কেটের বয়ন টেক্সটাইলের মালিক মো. জহির উদ্দিন ও তার দোকান কর্মচারী মুক্তা আসাম বলেন, ওই বার্মিজ টেক্সটাইল মার্কেটের বেচাকেনা চলে বাইরে থেকে আসা পর্যটক দিয়ে। করোনায় সারা দেশের মতো রাঙামাটিতেও পর্যটক আগমন বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসায় চরম বিপর্যয় নেমেছে। আমাদের ব্যবসা এমনিতে মৌসুমের কেবল ছয় মাস চলে। এখন বসে কাটানোর মৌসুম। তার ওপর করোনার ছোবল। অর্থনৈতিকভাবে একেবারে পঙ্গু হতে হয়েছে। আমরা এখন চরম মানবেতর পরিস্থিতির সম্মুখীন।

মার্কেটের মোহনা টেক্সটাইলের মালিক বিকাশ দাশ বলেন, ব্যবসা তো একেবারেই নেই। বাসায় সময় কাটে না। দোকান খোলে এমনি বসে থাকা ছাড়া কিছুই করার নেই। ক্রেতা নেই। নেই বেচাকেনা। কোনো মতে ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। ঋণের সুবিধা পেলে আগামী দিনে বাাঁচার চেষ্টা করতে পারতাম।

নিউ ইম্মা নূয়েল টেক্সটাইলের কর্মচারী জোনাকি চাকমা বলেন, জুনের প্রথম সপ্তাহে দোকান খুলেছি। কিন্তু বেচাকেনা কিছুই নেই। আমাদের হাতের তৈরি বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ ও পোশাক রফতানির জন্য মজুদ করেছিলাম। কিন্তু লকডাউনের কারণে ওইসব মালামাল যথা সময়ে ডেলিভারি দিতে পারিনি। এতে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এক কথায় বলা চলে, রাঙামাটিতে পর্যটক না আসলে আমাদের ব্যবসা চলে না। রাঙামাটির হস্তশিল্পে তৈরি জিনিসপত্র দেশের বিভিন্ন জেলায় রফতানি হয়ে থাকে।


সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions