বৌদ্ধ ধর্ম হলো শান্তির ধর্ম, তাই আমাদের সবাইকে আরো বেশি শান্তি প্রিয় হতে হবে : পার্বত্যমন্ত্রী

প্রকাশঃ ২৮ মে, ২০২০ ০৫:৩৯:৫৫ | আপডেটঃ ২৬ মার্চ, ২০২৪ ০১:০৯:২৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, বৌদ্ধ ধর্ম হলো শান্তির ধর্ম, তাই আমাদের সবাইকে আরো বেশি শান্তিপ্রিয় হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্মসমূহের অন্যতম। সিদ্ধার্থ গৌতম এর প্রবর্তক। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে তাঁর শিক্ষা ও উপদেশকে কেন্দ্র করে এ ধর্মের উদ্ভব ঘটে। মাত্র উনত্রিশ বছর বয়সে সিদ্ধার্থ জীবনে দুঃখের কারণ এবং তা থেকে মুক্তির উপায় অনুসন্ধানের জন্য সব রকম রাজকীয় মহিমা ও সুখভোগ পরিত্যাগ করে কঠোর সাধনায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। শেষে পয়ত্রিশ বছর বয়সে গয়ার নিরঞ্জনা নদীর তীরে একটি বৃক্ষের নিচে বসে তিনি সেই বোধি বা বিশেষ জ্ঞান (সম্মা সম্বোধি) অর্জন করেন।
পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি আরো বলেন, বুদ্ধের চিন্তা-ভাবনা মানুষের দুঃখকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে। তিনি মানব জীবনের এই সর্বাপেক্ষা বাস্তব ও মৌলিক বিষয়ে যে সত্য আবিষ্কার ও প্রচার করেছেন তা সাধারণত ‘চতুরার্য সত্য’ নামে পরিচিত। গৌতম বুদ্ধের বানী নিয়ে আজো আমরা সকল বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, তাই আমাদের সকলকে একসাথে চলতে হবে।

বৃহস্পতিবার সকালে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বান্দরবানের রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের নবনিযুক্ত বিহারাধ্যক্ষ জ্ঞানপ্রিয় মহাথের এর অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এসব কথা বলেন।

এসময় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বান্দরবান সদরের ঐতিহ্যবাহী (খিয়ংওয়াক্যং) রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে নব বিহারাধ্যকে বরণ করে নেয় বৌদ্ধ ধর্মালম্বী দায়ক ও দায়িকারা। দায়ক-দায়িকারা বিহারের মূল ফটক থেকে নবনিযুক্ত বিহারাধ্যক্ষকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শেষে তার হাতে (খিয়ংওয়াক্যং) রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উঃ ঞানাপিয়া (জ্ঞানপ্রিয়) মহাথের দায়িত্ব গ্রহন করেন।

অভিষেক অনুষ্ঠানে বাঘমারা বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উ: সোমা মহাথের, কাইন্তারমুখ বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উ: মিহিন্দা মহাথের, ভাঙ্গামুড়া বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উ: ক্রানা মহাথের, উজানিপাড়া মহা রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উ: ড.সুমনা লঙ্কার মহাথের, হানসামা বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উ: কেতু মহাথের, ওয়াব্রাইং পাড়া বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উ: ইন্দাচারা মহাথের সহ বিভিন্ন বিহারের অধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বোমাং রাজা উ চ প্রু, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, রাজকুমার সাচিংপ্রু জেরী, রাজপুত্র সাচিং প্রু বনিসহ বৌদ্ধ নর-নারীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, নবনিযুক্ত বিহারাধ্যক্ষ উঃ ঞানাপিয়া (জ্ঞানপ্রিয়) মহাথের বান্দরবানের প্রয়াত ১৩তম বোমাং রাজা ক্য জ সাই চৌধুরীর নাতি। তিনি এর আগে চট্টগ্রামের নন্দন কানন বৌদ্ধ বিহারে দায়িত্ব পালন করছিলেন। চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল বান্দরবানের রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ উপঞঞা জোত মহাথের (উচহ্লা ভান্তে) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পর বান্দরবানের রাজপরিবার ও প্রশাসনের সিদ্ধান্তক্রমে উঃ ঞানাপিয়া (জ্ঞানপ্রিয়) মহাথেরকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions