মানিকছড়ির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বায়োমেট্রিক’ মেশিনের দাম ৩৩ হাজার টাকা!

প্রকাশঃ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০১:২৭:৪৮ | আপডেটঃ ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৮:২৬:১২
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। মানিকছড়ি উপজেলার অর্ধশত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হাজিরা নিশ্চিতকরণে বায়োমেট্রিক ডিজিটাল মেশিন স্থাপনের অর্থ লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জোর গলায় বলছেন এতে অনিয়ম হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে মানিকছড়ি উপজেলার ৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লিপ বাবদ বরাদ্দ এসেছে ২০ লক্ষ টাকা। গড়ে প্রতিটি বিদ্যালয় পেয়েছে ৫০ হাজার টাকা। আর এ টাকা থেকে সরকারী নিদের্শনা অনুযায়ী কেনা হয়েছে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক শিক্ষক হাজিরা মেশিন। প্রতিটি  বায়োমেট্রিক মেশিনের দাম দেখানো হয়েছে ৩২ হাজার ৯ শত ৫০ টাকা। আর বায়োমেট্রিক মেশিনটির মডেল নং-টিজি-৯০, মেইড ইন চায়না। ৫-১০ জন শিক্ষকের হাজিরায় ৩৩ হাজার টাকার মেশিন ব্যবহার নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

গভামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান স্লিপ-এর বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। আর এ থেকে বায়োমেট্রিক মেশিন বসানোর নির্দেশনা থাকায় এবং শিক্ষা অফিসের নির্দেশিত কোম্পানীর লোকজন এসে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক মেশিন দিয়ে ৩২ হাজার ৯ শত ৫০ টাকা দাবী করেছে। এ মেশিনের বাজার মূল্য নিয়ে আমি সন্দেহ পোষণ করি এবং কোম্পানীর লোকজনের সাথে অনেক কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাদের নিয়ে শিক্ষা অফিসে এসে কর্মকর্তার সামনে লেন-দেন করি। অন্যদিকে তিনটহরী, এয়াতলংপাড়া, নতুন ডাইনছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ১৫টি প্রতিষ্ঠানের সকল বিল ভাউচার খুঁজে দেখা গেছে, ব্যয়ের প্রতিটি বিল-ভাউচার শিক্ষা কর্মকর্তার হাতে লেখা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অধিকাংশ প্রধান শিক্ষকরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ভয়ে কেউই মুখ খুলেননি। সকলে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।

অবশিষ্ট ১৭ হাজার টাকা খরচের কোন নমুনা কোথাও দৃশ্যমান হয়নি। একইভাবে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষ  পাঠদান উপযোগিকরণ ও সংস্কার বরাদ্দ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ ব্যয়েও নয়-ছয়ের অভিযোগ অভিভাবকদের।

মানিকছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, স্লিপের অর্থ ব্যয় করে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক শিক্ষক হাজিরা মেশিন কেনার নির্দেশনা থাকায় নির্ধারিত কোম্পানী থেকে এসব মেশিন কেনা হয়েছে। এতে বিন্দুমাত্র অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ কারো নেই।

মানিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, অনেক শিক্ষক ও অভিভাবকরা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাকে দেখাতে শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছি। অনিয়ম হয়ে থাকলে অবশ্যই দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions