সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। উৎসবের রঙ লেগেছে পাহাড়ে। খুশির জোয়ারে শুক্রবার উদযাপিত হয়েছে পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব বৈসাবির (বৈসুক, সাংগ্রাইং, বিজু) মুলদিবস। পুরনো বছরের যত অপূর্ণতা দূর করে নতুন বছরে তা পূরণসহ শুভ-মঙ্গলের প্রার্থনায় বৃহস্পতিবার সাত-সকালে নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে শুরু হয় তিনদিনের বৈসাবি বা বিজু উৎসব।
একই সঙ্গে একাট্টা পাহাড়িদের বৈসাবি আর আবহমান বাংলার বৈশাখী উৎসব। এতে মাতোয়ারা রাঙামাটিসহ পাহাড়ের মানুষ। শুক্রবার উৎসবের মূলদিবসে ঘরে ঘরে চাকমারা মূলবিজু, মারমারা সাংগ্রাইং আক্যা এবং ত্রিপুরারা বৈসুকমা পালন করেছে। এ দিন ঘরে ঘরে নানাবিধ বাহারি আয়োজন ও আপ্যায়ন দিয়ে উৎসবে মেতেছে পাহাড়ি শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের নারী-পুরুষ। এতে একাট্টায় মেতেছেন আবহমান বাংলার বাঙালিসহ সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষ। আর এতে পাহাজুড়ে বইয়ে যায় খুশির জোয়ার।
রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা এডভোকেট দীপেন দেওয়ান, কর্ণেল (অব) মণীষ দেওয়ান নিজ নিজ বাসভবনে সার্বজনিন আপ্যায়নে সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় করেছেন।
ত্রিপুরাদের বৈসুক, মারমাদের সাংগ্রাইং আর চাকমাদের বিজু’এর আদ্যাক্ষর সাজিয়ে মেলানো হয়েছে বৈসাবি। উৎসবের মূল আকর্ষণ চাকমাদের গেঙখুলি গীতের (লোকজ পালা গান) আসর, বাঁশ নৃত্য, মারমাদের জলকেলি এবং ত্রিপুরাদের গৈড়াইয়া নৃত্য মাতিয়ে তোলে পাহাড়কে।
শনিবার বাংলা নববর্ষের প্রথমদিন বা উৎসবের তৃতীয় দিন চাকমাদের গোজ্যেপোজ্যে, মারমাদের সাংগ্রাইং আপ্যাইং এবং ত্রিপুরাদের বিসিকাতাল উদযাপনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তিনদিনের মূল উৎসব। এ দিন পাশাপাশি বাংলা নববর্ষবরণে উদযাপিত হবে বৈশাখী উৎসব।
এ উপলক্ষে রাঙামাটিতে গৃহীত হয়েছে সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিকালে ঐতিহ্যবাহী বলিখেলা, দিনব্যাপী বৈশাখী মেলাসহ বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা।