সড়কে এখন “স্কুটি বাইক” ব্যবহার করছে নারীরা

প্রকাশঃ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০৮:৫৬:৩৮ | আপডেটঃ ০৪ মে, ২০২৪ ০৯:০৬:০৭
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি উপেক্ষা করে মফস্বল শহর খাগড়াছড়িতে স্কুটি বাইক ব্যবহার করছে নারীরা। আগে শুধুমাত্র চাকরীজীবী কয়েকজন নারী স্কুটি বাইক ব্যবহার করলেও ইদানীং শিক্ষার্থীসহ অনেকে আগ্রহী হচ্ছে।  

গণপরিবহনের চেয়ে ঝামেলা কম, অর্থ ও সময় সাশ্রয়ের কারণে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে স্কুটি বাইক। পেশাজীবী নারী ও শিক্ষার্থীদের কাছে বাহনটি এখন বিলাসীতার চেয়ে প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে। তবে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দূর্গম এলাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে কেউ কেউ হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলায় শতাধিক নারী স্কুটি বাইকার থাকার তথ্য রয়েছে মোটরসাইকেলের বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে ।     
   
বেসরকারি কলেজ শিক্ষিকা কেমিয়া চাকমা বলেন, স্কুটি বাইক ব্যবহার করে প্রতিদিন তিনি ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে কলেজে যাতায়াত করেন। খাগড়াছড়ি-পানছড়ি আঞ্চলিক সড়কর ভাইবোন ছড়া স্টপেজ থেকে তার কলেজ ভেতরে হওয়ায় আগে প্রায় সময় গাড়ি পাওয়া যেত না। স্কুটি ব্যবহার করায় সময় মতো যাতায়াত করা যাচ্ছে।

খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শ্রাবন্তী ত্রিপুরা বলেন, টমটমের(অটোরিক্সা) জন্য অপেক্ষা করে অনেক সময় ক্লাসে দেরী হয়ে যেত। স্কুটি নিয়ে যাতায়াত করার পর থেকে সময় মতো ক্লাস ও অন্যান্য জায়গা স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করা যাচ্ছে।

ইসরাত আমিন নামে আরেক শিক্ষার্থী জানান, গণপরিবহন(টমটম-অটোরিক্সা) এখনও মেয়েদের জন্য নিরাপদ বাহন হয়ে উঠেনি। খাগড়াছড়িতে টমটম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে রিক্সা একদমই কমে গেছে। তাই কলেজে যাতায়াতে টমটমে অপরিচিত লোকজনের সাথে শেয়ার করে বসে যেতে হয়। যেটি খুব বিব্রতকর। বিষয়টি পরিবারকে বুঝিয়েও স্কুটি বাইক নিয়েছি।

আনুচিং মারমা নামে এক নারী উদ্যোক্তা জানান, খাগড়াছড়ি বাজারে আমার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্কুটি বাইক ব্যবহার করায় ঠিক সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়াসহ অন্যান্য কাজ অনেক সহজে করতে পারছি।

নৃত্য শিল্পী রিয়া চাকমা জানান, আমি সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সাথে জড়িত হওয়ায় বিভিন্ন জায়গা আসা যাওয়া করতে হয়। এক্ষেত্রে স্কুটি বাইকটি খুবই উপকারে আসে। কিন্তু অনেক সময় রাস্তা ঘাটে স্কুটি বাইক চালাতে গিয়ে নানা রকম নেতিবাচক মন্তব্যের সম্মুখীনও হতে হয়।

খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(মুখপাত্র) এমএম সালাহউদ্দিন বলেন, নারীদের বাদ দিয়ে সামষ্টিক উন্নয়ন আশা করা যায় না। পাহাড়ে নারীরা রাস্তায় স্কুটি বাইক চালাচ্ছে। এটি দেশের উন্নয়নের অগ্রগতির বার্তা। এখনও পর্যন্ত কোন নারী স্কুটি ব্যবহারকারী হয়রানি শিকার হয়েছে বলে পুলিশের কাছে নেই। ইভটিজিং ও সামাজিক নেতিবাচক কর্মকা- রোধে কমিউনিটি পুলিশিং এবং সামাজিক সচেতনতার কার্যক্রম চলমান আছে।

 
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions