শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

কাল সকাল ৬টা থেকে রাঙামাটিতেও লকডাউন শুরু হবে

প্রকাশঃ ০৪ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:৩৭:৫৪ | আপডেটঃ ২৮ মার্চ, ২০২৪ ১২:৫২:৪৩  |  ১৫৭৩

শাহ আলম, সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। করোনা ভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বাড়ায় রাঙামাটিতে আগামীকাল সারাদেশের ন্যায় শুরু হওয়া লকডাউন নিয়ে জেলা প্রশাসনের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ রবিবার (০৪এপ্রিল) বিকাল ৩টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রশাসকের কার্যালযের সম্মেলন কক্ষে জরুরী সভা অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়


জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মীর মোদদাছের হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা, পরিবহন মালিক শ্রমিক প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, গণমাধ্যকর্মীরাসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যাযের কর্মকর্তাবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন


সভায় সরকারের ১১দফা প্রজ্ঞাপন তুলে ধরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, আন্ত জেলা যান চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে জেলা থেকে ঢোকা বা বের হওয়ার পথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেকপোস্ট বসানোর ব্যবস্থা হবে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত বের হওয়ার সম্পূর্ণ নিষেধ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সংকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ওষুধ, মৃতদের দাফন, সিকিউরিটি গার্ডসহ জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য পেশার মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে পারবে


তিনি জানান, মসজিদ মন্দিরসহ সব উপসনালয়ে ন্যূনতম উপস্থিতি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে প্রতি ওয়াক্তের নামাজে পাঁচজন এবং জুমার নামাজে ১০ জনের উপস্থিতির প্রস্তাব করা হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচাকেনার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত জায়গা বেছে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বেসরকারি আর্থিক সেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়িসহ ব্যক্তিদের চলাচলে বাধা থাকবে না তবে ব্যাংক খাতের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক পৃথক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বেসরকারি অফিসকে এক-তৃতীয়াংশ জনবল নিয়ে


নিষেধাজ্ঞা চলাকালে কোনো সরকারি কর্মচারীসহ বেসরকারি কর্মজীবীরাও তাঁদের কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না জেলা বাহির থেকে এসে অফিস করা যাবে না সবজি বাজার সন্ধ্যা ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে তিনি আরো জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, বিদ্যুৎ, পানি, ত্রাণ বিতরণ, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ডাকসেবা, হাসপাতাল, কৃষিপণ্য, সার, বীজ, খাদ্য, শিল্পপণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, নার্স, চিকিৎসক, কেবল নেটওয়ার্ককর্মী, গণমাধ্যমকর্মীদের পরিবহন চলাচলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করবে।


তিনি আরো বলেন, জেলা মাঠ প্রশাসন এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তিনি সকলকে সরকারের বিধিনিষেধ মেনে চলার আহবান জানান


সভায় জেলা পুলিশ সুপার জানান, সরকারের ১১দফা প্রজ্ঞাপনে বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি লকডাউন কেমন চলছে, কি অবস্থায় আছে তা দেখার জন্য জনগণকে রাস্তায় অহেতুক বের না হওয়ার আহবান জানান সরকারের ১১দফা

 

প্রজ্ঞাপনে বিধি-নিষেধ সমূহঃ

. সকল প্রকার গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না এছাড়া, বিদেশগামী/বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না


 . আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী যানবাহন নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে


. সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত অফিস আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে শিল্প-কারখানা নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে বিজিএমইএ বিকেএমইএকে শিল্প-কারখানা এলাকায় কাছাকাছি সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে


. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ঔষধ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সংকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না


. খাবারের দোকান হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না


. শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে তবে দোকান, পাইকারি খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে কেনাবেচাা করতে পারবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের মধ্যে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং কোনো ক্রেতা সশরীরে যেতে পারবে না


. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচা করা যাবে বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে


 . ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে


 . সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে


১০. সারাদেশে জেলা মাঠ প্রশাসন এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে


১১. এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions