বৃহস্পতিবার | ২৮ মার্চ, ২০২৪

রাঙামাটিতে নিয়ন্ত্রণহীন সিএনজি ভাড়া

প্রকাশঃ ১৭ অগাস্ট, ২০২০ ১২:১১:৫০ | আপডেটঃ ২৮ মার্চ, ২০২৪ ১১:২২:৪৪  |  ১৩২৬
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি।  রাঙামাটি শহরে নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়ছে শহরের একমাত্র আভ্যন্তরীন তিন চাকার যানবাহন সিএনজি। । করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সিএনজিতে ২০ টাকা হারে ২জন যাত্রী তোলার কথা থাকলেও সিএনজি চালকরা পুর্বের মত ৫জন যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি ভাড়াও দ্বিগুন নিচ্ছে।

শহরে বিকল্প যানবাহন না থাকায় তারা যাচ্ছে তাই ভাড়া আদায় করছে। ভাড়া আদায় নিয়ে রীতিমতো বেপরোয়া অটোরিকশা চালকরা। তারা আইন-বিধির কিছুই তোয়াক্কা করে না। মানছে না ট্রাফিক আইন। মানছে না জেলা প্রশাসন নির্ধারণ করে দেয়া ভাড়ার তালিকা। অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে প্রায় সময় অটোরিকশা চালক ও যাত্রীদের মধ্যে বচসা হয়ে থাকে। ঘটছে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাও। এছাড়া অটোরিকশা চালকরা কথায় কথায় অশোভন আচরণ করে থাকে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা।  

করোনাকালীন মার্চ মাস থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিএনজিতে ২জন যাত্রী পরিবহন করার কথা,
সে সময় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের তৎপরতা থাকায় তারা জেলা প্রশাসনের দেয়া নিয়ম কানুন মেনেও চলে। ভ্রাম্যমান আদালতের তৎপরতা কমে যাওয়ায় আগের মত বেপরোয়া হয়ে উঠছে কতিপয় সিএনজি চালক। বনরুপা, তবলছড়ি এবং রিজার্ভবাজারের ভাড়া জনপ্রতি ২০ নির্ধারণ করে দেয়া হলেও সেটি তারা না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন এবং অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় বিষয়টি গত ৯ আগষ্ট জেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা করা হয়। এতে জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ পুর্বে ভাড়া নেয়ার অনুরোধ জানান রাঙামাটি অটোরিক্স চালক সমিতির সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান রোমানের প্রতি। সভায় পুর্বের ভাড়া নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও সিএনজি চালক সমিতি সেটি বাস্তবায়ন না করায় আজ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়।     

এদিকে শহরে দূরত্বভেদে ২০১৩ সনে অটোরিকশার যাত্রীভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। প্রশাসন থেকে নির্ধারণ করে দেয়া ভাড়ার তালিকায় শহরের রিজার্ভবাজার- তবলছড়ি ১২ টাকা, রিজার্ভবাজার এবং তবলছড়ি থেকে শহীদ মিনার-পুরাতন বাসস্টেশন ৮ টাকা, ফিসারীঘাট-পৌরসভা ১০ টাকা, বনরুপা-কোর্টবিল্ডিং ১২টাকা, রিজার্ভবাজার ও তবলছড়ি থেকে রাজবাড়ী স্টেডিয়াম-ডাকঘর ১৫টাকা, কলেজগেট ২০ টাকা, উপজেলা পরিষদ-ভেদভেদী ২৪ টাকা। বিপরীত দিক থেকে ভেদভেদী-কলেজগেইট-উপজেলা পরিষদ ৮ টাকা, ডাকঘর-ষ্টেডিয়াম ১০টাকা, বনরুপা-কোর্টবিল্ডিং ১২টাকা, পৌরসভা-ফিসারীঘাট ১৮টাকা, পুরাতন বাসস্টেশন-শহীদ মিনার ২০টাকা, কলেজগেট থেকে কোর্টবিল্ডিং-বনরুপা ১০টাকা এবং তবলছড়ি থেকে আসামবস্তি ১২টাকা, পর্যটন-বিজিবি হেডকোয়ার্টার ১২টাকা, ভেদভেদী থেকে মোনঘর ১০টাকা, রাঙ্গাপানি ১২টাকা, ভেদভেদী থেকে মনোঘর হয়ে আসামবস্তি ২০টাকা, প্রেসক্লাব থেকে ডিসিবাংলো-সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ১২টাকা ও ইন্দ্রপুরি সিনেমা হল থেকে রিজার্ভবাজর ৫ টাকা।

সিএনজি ভাড়া নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জেলা অটোরিক্সা চালক সমিতির সাধারন সম্পাদক শহীদুজ্জামান রোমান কোন কথা বলতে রাজি হননি।

জেলা  অটোরিক্সা চালক সমিতির সভাপতি পরশে মজুমদার ভাড়া কমানোর বিষয়ে আমরা কিছু জানি না, আমাদের জেলা প্রশাসন থেকে ডাকা হয়নি। তবে আমরা ভাড়া বৃদ্ধির জন্য অনেক আগে জেলা প্রশাসনে আবেদন করেছি, তেল এর দাম না বাড়লেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে।

তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসন যদি আমাকে ডাকে আমরা বসে ভাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাই যাতে যাত্রী ও চালক উভয়ের কুল রক্ষা হয়।

ভাড়ার বিষয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ বলেন, যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিএনজি চালকরা যাত্রী পরিবহন করছে না, তাই আমরা বলেছি আগের ভাড়ার তালিকায় যাত্রী পরিবহন করতে। আজকে জেলা প্রশাসন থেকে এই বিষয়ে মাইকিং করা হয়েছে। যারা নির্দেশনা মানবে না অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

সাধারণ যাত্রীরা জানান, রাঙামাটি শহরে অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের জন্য অটোরিকশা ছাড়া অন্য কোনো লোকাল বা টাউন সার্ভিস নেই। ফলে সব সময় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়তে হয় স্থানীয় লোকজনকে। যাত্রীারা রীতিমতো জিম্মি অটোরিকশা চালকদের কাছে। তাদের কাছে ভাড়া নিয়ে সব সময় নাজেহাল হয়ে পড়েন যাত্রীরা।



এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions