শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

নিহতদের মরদেহ বেওয়ারিশ হিসাবে দাহ, জেএসএসের বিবৃতিতে পরিচয় প্রকাশ

প্রকাশঃ ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০১:০৫:৪১ | আপডেটঃ ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০৪:১৭:২৯  |  ৪৩৫৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির রাজস্থলীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বে-ওয়ারিশ হিসেবে তিন জনের লাশ দাহ করা হয়েছে।

দুপুরে নিহতদের লাশ ময়না তদন্ত শেষে রাজস্থলী থানার পুলিশ রাঙামাটি পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। পরে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আসামবস্তী শ্মসানে লাশ দাহ করে।

সোমবার সন্ধ্যার দিকে রাজস্থলী উপজেলা সদর হতে প্রায় ১৫-১৬ কিলোমিটার দূরত্বে গাইন্দ্যা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বালুমুড়া মারমাপাড়া নামক দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় গোলাগুলিতে  নিহত তিন জনের লাশ উদ্ধার করে, রাজস্থলী থানা পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর যৌথ দল।

রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবির জানান, পাহাড়ীদের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে ৩জন মারা গেছে, যারা মারা গেছে তারা জেএসএস সন্তু লারমা  গ্রুপের, অপর পক্ষ কে ছিল জানা যায়নি।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় নিহতদের লাশ রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে রাঙামাটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করে, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বিকালে লাশগুলো আসামবস্তী শ্মশানে দাহ করে।

রাজস্থলী থানার এস আই শাহ আলম জানান, সোমবার রাতে হাত মোরা বাঁধা এবং মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৩জনের লাশ আমরা উদ্ধার করি, লাশের কোন দাবিদার না থাকায় আমরা লাশ পৌরসভাকে বুঝিয়ে দেই। তাদের পরিচয় আমরা জানতে পারিনি।

এদিকে বিকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির জেলা কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, সিএইচটি টুডে ডট কমসহ বেশ কয়টি অনলাইনে “রাজস্থলীতে জেএসএস এর আভ্যন্তরীণ কোন্দলে ৩জন নিহত” হওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়। বস্তুত জনসংহতি সমিতির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সংবাদ সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট, বিকৃত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত।

বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল ১৮ নভেম্বর সকালে আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি)-এর একটি গ্রুপঅস্ত্র-শস্ত্রসহ অবস্থায় বান্দরবান জেলার সদর উপজেলার রাজভিলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ৮নং নোয়াপাড়া গ্রামে প্রবেশ করে। প্রবেশ করেই তারা এলাকার যুবক ও পুরুষদের ধরপাকড় শুরু করে এবং তাদেরকে মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে বিকালে নোয়াপাড়ার কার্বারী (গ্রাম প্রধান) মোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা (৫৫) ও তার ছেলে সুখমণি(শুক্রমনি) তঞ্চঙ্গ্যা (৩২) সহ চারজন গ্রামবাসীকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে একজনকে ছেড়ে দিলেওমোনারাম তঞ্চঙ্গ্যা ও সুখমণি তঞ্চঙ্গ্যাসহ বাকী তিনজনকে সন্ধ্যার দিকে গাইন্দা ইউনিয়ন ও রাজভিলা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বালুমুড়া স্থানে নিয়ে গুলিকরে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

তারা এঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতৃত্বসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রত্যক্ষ মদদ ও যোগসাজশে কখনো কখনোস্থানীয়ভাবে ‘মগ লিবারেশন পার্টি’ নামে পরিচয়দানকারী এএলপি নামক বিদেশী সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং সংস্কারপন্থী খ্যাত তাঁবেদার সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে খুন, সংঘাত, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। আর এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো দ্বারা সংঘটিত ঘটনাকে দোহাই দিয়ে জনসংহতি সমিতির সদস্য ও সমর্থকসহ নিরীহ গ্রামবাসীর উপর নির্বিচারে তল্লাসী, মিথ্যা মামলা দায়ের,অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন,গ্রেফতার, হত্যাসহ ফ্যাসীবাদী কায়দায়দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে।

রাজনৈতিক হীনউদ্দেশ্যে প্রশাসনের সরবরাহকৃত বিকৃত ও সাজানো তথ্যের ভিত্তিতে উল্লেখিত সংবাদমাধ্যমে এধরনের ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশের বিরুদ্ধে জনসংহতি সমিতি তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছে। এই ভিত্তিহীন সংবাদ প্রত্যাহার করে ঘটনার বস্তুনিষ্ট তথ্য নিয়ে যথাযথ সংবাদ প্রকাশের জন্য এসব সংবাদমাধ্যমকে আহ্বান জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, হত্যার শিকার এসব গ্রামবাসী জনসংহতি সমিতির কোন সদস্য নন এবং তারা কোন প্রকার সশস্ত্র তৎপরতার সাথেও যুক্ত নন।


এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions