শুক্রবার | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

জেএসএস নেতা কে এস মংমারমাসহ গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি

প্রকাশঃ ২৬ মে, ২০১৯ ০৭:৪১:৫৪ | আপডেটঃ ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০৫:৩৩:৩৫  |  ২২২০
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। গতকাল ২৫ মে ২০১৯ বান্দরবান সেনা জোন কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মংমারমা এবং বান্দরবান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রোয়াংছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ক্যবা মং মারমাকে বান্দরবান সেনা জোনে ডেকে নিয়ে গ্রেফতারের অভিযোগ এনে এই ঘটনায় জনসংহতি সমিতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাধারন সম্পাদক গুনেন্দু বিকাশ চাকমা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বান্দরবান সেনা জোনে আলোচনার জন্য ডেকে ২ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে  বিকালে সেনা জোন কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বান্দরবান থানায় সোপর্দ করে। অপরদিকে গতকাল কোলক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান থোয়াইহ্ণা প্রু মারমা ও জর্ডান পাড়ার কার্বারী মংহ্লা ত্রিপুরাসহ আরো তিনজনকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। তাদের সকলের বিরুদ্ধে গত ২২ মে বান্দরবান জেলার কুহালং ইউনিয়নের উজিমুখ হেডম্যানপাড়া থেকে বান্দরবান পৌরসভার সাবেক কমিশনার ও পৌর আওয়ামীলীগের সহসভাপতি চথুই মং মারমাকে অজ্ঞাতনামা দুবৃর্ত্ত কর্তৃক অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় স্থানীয়ভাবে মগপার্টি নামে খ্যাত আরাকান লিবারেশন পার্টি (এএলপি)-এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বান্দরবান সদর উপজেলা এবং রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী ও কাপ্তাই উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে একের পর এক হত্যা, অপহরণ, হুমকি, চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছে। যেমন- ১৮ ফেব্রুয়ারি পিসিপির রাজস্থলী শাখার সভাপতি উক্যনু মারমার বাড়ি ঘেরাও; ১১ মার্চ কাপ্তাইয়ের রাইখালীতে যুব সমিতির চিংসাউ মারমা, জনসংহতি সমিতির উচিংমংমারমা ও যুব সমিতির অংথোয়াই চিং মারমাকে মারধর করে আহত করা; ১৪ এপ্রিল রাজস্থলীতে জনসংহতি সমিতির রাজবিলা শাখার সদস্য অংক্যচিং মারমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা; ২৩ এপ্রিল জনসংহতি সমিতির রাজস্থলী শাখার সদস্য ও গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মংক্যসিং মারমাকে অপহরণ(এখনো নিখোঁজ); ৭ মে বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নের রাবার বাগানে যুব সমিতির বিনয় তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলি করে হত্যা এবং ফোলারাম তঞ্চঙ্গ্যাকে অপহরণ; ৯ মে বান্দরবানের কুহালং ইউনিয়নের ৩নং রাবারবাগানেজয়মণি তঞ্চঙ্গ্যাকে গুলিকরেহত্যা; ১৩ মে বান্দরবানশহরেরউপকণ্ঠেপ্রুমংঞোপাড়ায় ১২ গ্রামবাসীকে হত্যার হুমকি; ১৫ মে রোয়াংছড়ি উপজেলার আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের সাধু হেডম্যান পাড়ায় শান্তি লাল ত্রিপুরাসহ দুইজনকে গুলি করে হত্যা; ১৮ মে রাজবিলা ইউনিয়নের চিংক্ষ্যংপাড়া থেকে উনু মং মারমাকে অপহরণ (এখনো নিখোঁজ); ১৯ মে ভোরে রাজবিলা ইউনিয়নের তাইংখালী ৮নং রাবার বাগান পাড়ায় ক্যচিং থোয়াই মারমা নামে একগ্রামবাসীকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা; ২২ মে চথুই মংমারমাকে অপহরণ ও পরে তার লাশ উদ্ধার ইত্যাদি ঘটনা ঘটিয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, স্থানীয় আওয়ামীলীগের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও প্রত্যক্ষ মদদে বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন এএলপি কর্তৃক এভাবে একের পর এক হত্যা, অপহরণ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জনসংহতি সমিতি বার বার দাবি করে আসছে। কিন্তু প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উপরন্তু গত ২২ মে চথুইমংমারমাকে অপহরণের ঘটনায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনসংহতি সমিতিকে দায়ি করে ক্ষমতাসীন দল ও সরকারি বাহিনী কর্তৃক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এবং তাদেরকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, ধরপাকড়, দমন-পীড়ন, এলাকা ছাড়া করা, জনসংহতি সমিতির নেতৃত্ব শূণ্য করা ইত্যাদি ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে গতকাল ২৫ মে ডেকে নিয়ে জনসংহতি সমিতির দুই কেন্দ্রীয় সদস্য কেএসমংমারমা ও ক্যবা মংমারমাকে অবৈধভাবে গ্রেফতার করা হয়। সারা রাত ধরে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা বান্দরবান শহরে জনসংহতি সমিতির নেতা-কর্মীদেরকে অবৈধ গ্রেফতারের হীন উদ্দেশ্যে তাদের ঘরবাড়ি ঘেরাও করেছে। এএলপি নামক একটি বিদেশী সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলকে অবাধে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপে মদদ দিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী এসব এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে বলে অভিযোগ করেছে জেএসএস।

বিবৃতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ৩দফা দাবি জানায়, দাবিগুলো হচ্ছে

১) গ্রেফতারকৃত হেডম্যান ও গ্রামের কার্বারীসহ জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য কেএসমংমারমা ও ক্যবা মং মারমাকে অচিরেই নি:শর্তে মুক্তি প্রদান, ২) বিদেশী সশস্ত্র সংগঠন- এএলপি’কে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে চলমান হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস বন্ধ করা এবং এএলপির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং এবং এসব ঘটনায় জনসংহতি সমিতির সদস্যদেরকে জড়িত করে মিথ্যা মামলা দায়ের, ধরপাকড়, দমন-পীড়ন, এলাকা ছাড়া করার হীন ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions