বৃহস্পতিবার | ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

জুরাছড়িতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হলো বৈসাবি উৎসব

প্রকাশঃ ১২ এপ্রিল, ২০১৯ ০২:১৮:৩৫ | আপডেটঃ ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৮:২৮:২৮  |  ২৮০১
সিএইচটি টুডে ডট কম, জুরাছড়ি (রাঙামাটি)। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সমুহের প্রধান উৎসব বৈসাবি আনন্দে পাহাড়ে এখন নানা রঙে রঙ্গিন।  আজ (শুক্রবার) জুরাছড়ি উপজেলায় লুলাংছড়ি ও কুসুমছড়ি মৌজার হেডম্যান-কার্ব্বারীদের উদ্যোগে খাগড়াছড়ি ছড়ায় (নদী) ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে তিন দিনের বৈসাবির উৎসবের সূচনা করা হয়েছে। এতে অসংখ্য শিশু, তরুন তরুনী স্ব-স্ব ঐতিহ্য পোশাক পড়ে এবং ফুলে সজ্জিত হয়ে অংশ গ্রহন করে।

১৩ এপ্রিল ২য় দিন মূল বিজু ও ১৪ এপ্রিল ৩য় দিন গোইজ্জ্যা-পোজ্জো দিন নামে পালন করবে এখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা। আদিবাসীরা বিশেষ করে তরুন-তরুনীরা মেতেছে বৈসাবী উৎসবে। বৈসাবিকে ঘিরে সপ্তাহজুড়ে চলছে নানা আয়োজন। বিশ^ শান্তি ও মঙ্গল কামনায় সুবলং শাখা বন বিহারে আজ থেকে তিন দিন ব্যাপী ত্রিপিটক পূজা। পূজার পাশাপাশি মঙ্গল শোভা যাত্রা, সংর্ঘ দান, অষ্টপুস্কার দান, বুদ্ধ মুর্তি দান পঞ্চশীল গ্রহন করা হয়। শোভা যাত্রায় নেতৃত্ব দেন নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা।

এদিকে লুলাংছড়ি মৌজার হেডম্যান আনন্দ মিত্র দেওয়ান ও কুসুমছড়ি মৌজার হেডম্যান মায়া নন্দ দেওয়ানসহ এলাকার কার্ব্বারী ও ইউপি সদস্যদের সহযোগীতায় ডেবাছড়া ও লুলাংছড়ি মাঠে পৃথক ভাবে চলছে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহি বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগীতা। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এলাকার একজাগ তরুন-তরুনী।

উপজেলা জুড়ে বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে সেজেছে নানা বৈচিত্র্যের ঐকতানে। প্রতিটি পরিবারের মাঝে যেন আনন্দের বারতা। সব দুঃখ-গ্লানি মুছে ফেলে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে তৈরী হয়েছে আদিবাসীরা।

চৈত্রসংক্রান্তির আগের দিনকে বলা হয় ফুল বিজু। উৎসবের প্রথম দিনে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সব আদিবাসী জনগোষ্ঠীর শিশু-তরুন-তরুনীরা ফুল সংগ্রহ করে ঘর সাজাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। আর চৈত্রসংক্রান্তির দিনকে বলা হয় মূল বিজু। এদিনে ঘরে ঘরে রান্না হবে ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘পাজন’। তা দিয়ে দিনভর চলে অতিথি আপ্যায়ন। চাকমা জনগোষ্ঠীর মধ্যে পচলিত আছে, বিজু উৎসবের দিন কারও বাড়িতে গেলে অবশ্যই পাজন খেতে হয়। কেবল একটি বাড়ীতে নয়, খেতে হবে অন্তত ১০টি বাড়ীতে। না হয় পরের জম্মে মানবজম্ম নাও হতে পারে।

পাজন অর্থাৎ পাঁচন কেবল সুস্বাদু সবজির ঘন্ট নয়, এটি চাকমা-মারমা-ত্রিপুরাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উৎসব পালনের অন্যতম উপকরণ। ঈদে যেমন সেমাই, তেমনি বিজু বা নব্বষের পার্বণে পাজন অতিথি আপ্যায়নে অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। এছাড়া এর সঙ্গে থাকবে আদিবাসীদের তৈরী নানা পিঠা ও পায়েশ। তবে কালের সামাজিক বির্বত্তনে বিলুপ্ত প্রায় চোরই মদ। এই চোরাই মদ বহু আগে অতিথি আপ্যায়নের একটি অংশ ছিল।
অন্যদিকে বাংলা বর্ষবরণকে ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। জুরাছড়ি প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে দিনব্যাপী বর্ষবরণের আয়োজন। উপজেলায় বৈসাবি ও বাংলা বর্ষবরনের আয়োজন নিয়ে জুরাছড়িতে এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

রাঙামাটি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions