কাপ্তাইয়ের কেপিএম এমডিকে ক্ষমা চাইতে আওয়ামীলীগের ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম

প্রকাশঃ ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১২:০২:২৫ | আপডেটঃ ২৪ মার্চ, ২০২৪ ১১:২৬:৩০
সিএইচটি টুডে ডট কম, কাপ্তাই (রাঙামাটি)। কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান ও চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে মিথ্যাচার, মানহানিকর এবং আপত্তিকর সাক্ষাতকার দেওয়ার অভিযোগ তুলে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কেপিএম এমডিকে ক্ষমা চেয়ে উক্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করার আল্টিমেটাম দিয়েছে কাপ্তাই উপজেলা আ.লীগ সহ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অন্যথায় প্রতিষ্ঠানটির এমডির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা সহ কেপিএমের এমডি কার্যালয় ঘেরাও সহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুসিয়ারি দেন নেতারা। 

রোববার (২৭ই সেপ্টেম্বর) বিকালে চন্দ্রঘোনা ইউপি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় এ আল্টিমেটাম দেয় নেতাকর্মীরা। প্রতিবাদ সভায় কাপ্তাই উপজেলা আ.লীগের সঙ্গে একাত্তা পোষন করেন অংশ নেন পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের সকল জনপ্রতিনিধিরাও।

চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবির সভাপতি প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক। প্রধান আলোচকের বক্তব্যে রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী। উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা আক্তার হোসেন মিলনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ, রাইখালী ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এনামূল হক, উপজেলা যুবলীগের সা. সম্পাদক তানভির আহম্মেদ সিদ্দিকী, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম নূর উদ্দিন সুমন, কেপিএম সিবিএ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সিবিএ সা. সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু সহ আরও অনেকে। এসব উপজেলা-ইউনিয়নের আ.লীগ ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের ৫’শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, কর্ণফুলী পেপার মিলস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এম এম এ কাদের গত ২৫ই সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টিভির ‘তালাশ ৩৬০ ডিগ্রী’ অনুষ্ঠানে প্রচারিত সংবাদে কেপিএমের নানা সমস্যা নিয়ে সাক্ষাতকার দিতে গিয়ে আক্রমনাত্বক ভাবে কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক সহ চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবিকে মাদকাগ্রস্থ আখ্যায়িত করে তাদের বাড়িতে মাদকের আড্ডা বসানো হয় বলে মন্তব্য করেন। বক্তব্যে কেপিএমের এমডি ডা. এম এম এ কাদের কেপিএম শীঘ্রই বন্ধ হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন। মিলসটিতে ৮০টন কাগজ উৎপাদন হলেও মিলসটি আর বাঁচানো সম্ভব না বলে জোড়ালো কন্ঠে চ্যালেঞ্জ জানান তিনি।

কেপিএমের এমডি ডা. এম এম এ কাদের এশিয়ার বৃহত্তর কর্ণফুলী কাগজ কলকে ধ্বংস করতে বেসরকারি মিলসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলে দাবি করেন নেতারা। সিবিএন এমপ্লইজ ইউনিয়ন নেতা বলেন, তিনি (কেপিএম এমডি) বিএনপি জামাতের সঙ্গে জড়িত। বেসরকারি কাগজ কলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গত ২ বছর যাবত ঐতিহ্যবাহি প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করতে পায়তারা করছেন। বন্ধ করেছেন কাগজ উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ পাল্প মেশিন সহ নানান যন্ত্রাংশ। শ্রমিক-কর্মচারিকে কাগজ উৎপাদনে না লাগিয়ে রুটিন আকারে গাছ রোপন ও পরিচর্যার জন্য মাঠে পাঠান। কাগজ কলই যদি বন্ধ হয়ে যায় গাছ দিয়ে কি হবে?


কাপ্তাই উপজেলা আ.লীগ সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী বলেন, আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চান তাহলে কাপ্তাই উপজেলায় অচল করে দেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা সহ কেপিএম এমডি কার্যালয় ঘেরাও করে কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে। আর এই অনাকাঙ্খিত ঘটনার সমস্ত দায় কেপিএম এমডিকেই নিতে হবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।

কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক সহ চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবি বলেন, আমরা কখনোই মাদকের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমাদের বিরুদ্ধে টিভিতে প্রচারিত সংবাদে এসব মন্তব্য করে তিনি আমাদের সম্মান নষ্ট করেছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করবো। কাপ্তাই উপজেলা আ.লীগ সব সময় কেপিএম বাঁচাতে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছে। কখনো কোন কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেনি।

এই বিষয়ে জানতে কর্ণফুলী পেপার মিলস এর এমডি ডা. এম এম এ কাদের বলেন, আমি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক ও চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবির নাম ধরে মাদকের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা বলিনি। আমি বলেছি কেপিএমের অনেক বাসায় সন্ধ্যার পর মাদকের আড্ডা বসে। আওয়ামীলীগের আল্টিমেটাম প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ প্রসঙ্গে কিছু বলতে রাজি হননি। জানান, সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে যোগাযোগ রাখছেন।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions