প্রকাশঃ ২২ জুলাই, ২০১৯ ০৬:৪৫:২৪
| আপডেটঃ ১২ মে, ২০২৪ ০৪:৪৫:১৮
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানের রেইচা-গোয়ালিয়াখোলা এলাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্ততর (এলজিইডি) বান্দরবানের বাস্তবায়নে সাংগু নদীর উপর গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে ধীরগতিতে,এই গার্ডার ব্রিজ নির্মাণে কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানো হলে ও নানান অজুহাতে ব্রিজ নির্মাণে নেই তেমন কোন অগ্রগতি আর এতে ভোগান্তীতে রয়েছে এলাকাবাসী।
বান্দরবানের রেইচা-গোয়ালিয়াখোলা এলাকায় সাংগু নদীর উপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্ততরের বাস্তবায়নে চলছে একটি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজ। সাধারণ জনগণের দাবির মুখে রেইচা-গোয়ালিয়াখোলা ও চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ইউনিয়নের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করার লক্ষে ২০১৬ সালের ১২ই মে ব্রিজটির ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
এই ব্রীজ নির্মাণ হলে সাংগু নদীর দুপাড়ের প্রায় ৩ হাজার পরিবারের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নসহ কৃষি পণ্য আমদানি-রপ্তানি এবং বর্ষা মৌসুমে যাতায়াত সহজতর হবে বলে আশা স্থানীয়দের। কার্যাদেশ অনুযায়ী দেড় বছরের মধ্যেই ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল,তবে নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানো হলে ও ব্রিজের অর্ধেক কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার,আর এতে চরম ভোগান্তীতে রয়েছে সাংগু নদীর দুপাড়ের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা মো:নাছির উদ্দিন বলেন, এই ব্রীজ নির্মাণ হলে আমাদের সকলের লাভ হবে । আমাদের এখন অনেক কষ্ট হয় । নদীতে নেমে নৌকা করে এপার ওপার পার হতে হয় । বর্ষাকাল আসলে নৌকা চলে না ,আমাদের ভোগান্তীর শেষ থাকে না।
স্থানীয় বাসিন্দা নুর আলাম বলেন, দ্রুত এই ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ করা হলে দু’পারের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ এলাকার আমূল পরিবর্তণ ঘটবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্টান অজ্ঞাত কারণে শ্রমিক কম দিয়ে এই কাজ করছে আর কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়ে ও কাজ শেষ করতে পারেনি।
ঘাট মাঝি মো: লোকমান হাকিম বলেন,এই ব্রীজ না হওয়ায় আমরা প্রচুর কষ্ট পাচ্ছি । হবে হবে বলে প্রায় তিন চার বছর শেষ হল ,কখন কাজ শেষ হয় জানি না। এই ব্রীজ না হওয়ায় আমাদের নৌকা দিয়ে এপার ওপার যেতে হয় আর বর্ষাকালে নৌকা দুর্ঘটনায় অনেককেই পানিতে পড়তে হয় ।আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই দ্রুত এই ব্রীজের কাজ শেষ করা হোক।
সাঙ্গু নদীর উপর ২শ’ ২০মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজের কার্যাদেশ পায় শেখ হেমায়ত আলী এন্ড ইউ টি মং (জেভি) প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন গার্ডার ব্রিজটির বরাদ্ধ ধরা হয়েছিল ১২ কোটি ৬১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। অথচ সাড়ে তিন বছর পার হয়ে গেলেও ঠিকাদারের উদাসীনতায় ব্রিজের অর্ধেক কাজ শেষ না হলে ও ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের দাবি আগামী বছরের মধ্যে এই ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ হতে পারে।
শেখ হেমায়ত আলী এন্ড ইউ টি মং কনস্ট্রাশন এর সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো:আরমান হোসেন বলেন,আমাদের ব্রীজের প্রায় ৬৫% কাজ শেষ হয়েছে । প্রথম যে প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে তাদের থেকে আমরা কাজটি কিনে শুরু করেছি তখন কিছু সময় নষ্ট হয়েছে আর পরে মাটি ব্রেরিং করতে গিয়ে কিছুটা দেরি হয়েছে তাই ব্রীজ নির্মাণ কাজ সঠিক সময়ে শেষ করা যায়নি। সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো:আরমান হোসেন আরো বলেন,আশা করি আগামী ২০ সালের শেষ দিকে এই ব্রীজের কাজ শেষ করা যেতে পারে।
ব্রীজের কাজে ধীরগতি ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অদক্ষতায় সম্প্রতি এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্রীজের কাজ পরিদর্শন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। এসময় মন্ত্রী দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করে এলাকাবাসীর দু:খ লাঘবের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তাদের নিদের্শ দেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী মো:আবু তালেব বলেন, ব্রীজের কাজ চলমান রয়েছে এবং শীঘ্রই সম্পূর্ণ কাজ শেষ করে এই ব্রীজ জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।আমরা প্রতিনিয়ত এই ব্রীজের কাজ মনিটরিং করছি এমনকি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ব্রীজের কাজ পরিদর্শনের পরে আমরা এই কাজের গতি বৃদ্ধির জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের প্রতি নিদের্শনা ও প্রদান করেছি । নির্বাহী প্রকৌশলী মো:আবু তালেব আরো বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর বান্দরবানে আরো বেশ কিছু উন্নয়নমলক কাজ করে যাচ্ছে এবং সকল কাজ সরকারি নিয়ম মোতাবেক হচ্ছে এবং এই কাজটি একটু দেরীতে হলে ও মানের দিক থেকে সব কিছু সমান রাখা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি কালক্ষেপন না করে দ্রুত এই ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ করা হোক আর এই ব্রীজ নির্মাণ হলে হলে দু’পারের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ এলাকার আমূল পরিবর্তণ ঘটবে,কমবে কয়েকটি গ্রামের দূরত্ব আর ব্রিজ কেন্দ্রিক বাড়বে ব্যবসা বাণিজ্য উন্নয়ন হবে যোগাযোগ ব্যবস্থার।