শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪
কাচালং, কর্ণফুলী, মাইনী, চেঙ্গী নদী ড্রেজিং করার দাবী

বন্যায় বাঘাইছড়ি উপজেলার ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি

প্রকাশঃ ১৮ জুন, ২০১৮ ০১:২৯:৫২ | আপডেটঃ ২৬ মার্চ, ২০২৪ ০৮:০২:০০  |  ৬৮৪
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। সাম্প্রতিক বন্যায় বাঘাইছড়ি উপজেলায় বিভিন্ন সেক্টরে প্রায় শতকোটি টাকারও অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে বাঘাইছড়ির করেঙ্গাতলী, বঙ্গলতলী, বারিবিন্দু ঘাট, বাঘাইছড়ি সদর, দুরছড়ি সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের রাস্তা ঘাট, ব্রীজ কালভার্ট, ফসলী জমি ও বাড়ী ঘরে ভেঙ্গে নিয়ে গেছে বন্যার পানির তোরে। স্থানীয় লোকজন বলছে কাচালং নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় ২০০৭ সালের বন্যাকে হার মানিয়েছে এবারের বন্যা।
বন্যার পানির তোরে বাঘাইছড়ি উপজেলায় প্রাণ হারিয়েছে দুইজন। গৃহপালিত গরু, ছাগাল, হাঁস মুরগী সহ গবাদী পশু বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়ার কথা বলে রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থরা। গতকাল  ১৭ জুন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বাঘাইছড়ি উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করতে গেলে তার কাছে এমনটাই বর্ননা করেন স্থানীয় লোকজন।
করেঙ্গাতলী বাজারের মেম্বার জানান, এবারের বন্যায় করেঙ্গাতলী বাজারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত সোমবারে রাতের বেলায় হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে গেছে। পানির ¯্রােত এতোই বেশী ছিলো যে লোকজন কোন ভাবে নিজের প্রাণ নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র ছুটে এসেছে। করেঙ্গাতলী বাজার এবারের বন্যায় ব্যাপক ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙ্গণ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আগামি দিন গুলোতে করেঙ্গাতলী বাজার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন।

বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী হোসেন জানান, উপজেরার ৭ টি ইউনিয়নে এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবারের বন্যা ২০০৭ সালের বন্যাকে হার মানিয়েছে। রাতের বেলায় পানি বেড়ে যাওয়ায় আমরা বোট নিয়ে লোকজনকে উদ্ধার করেছি। অনেক পরিবারকে টিনের চাল খুলে বের করতে হয়েছে। কোন কিছু বোঝার আগেই বন্যার পানি বেড়ে গেছে। কাচালং নদীর দুই পারে থাকা অনেক বাড়ীঘরে পানির ¯্রােতে ভেসে গেছে। তিনি বলেন, বন্যার সাথে সাথে আমরা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করি। উপজেলার ১৯ টি আশ্রয় কেন্দ্রে আমরা প্রায় ২ হাজার পরিবারকে তিন দিন ধরে শুকনা খাবার, খাবার স্যালাইন, বিশুদ্ধ পানি ও বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছি। তিনি অতি দ্রুত কাচালং নদী ড্রেজিং করার আবেদন জানান সরকারকে।

বাঘাইছড়ি পৌরসভার মেয়র জাফর আলী জানান, বন্যায় বাঘাইছড়ি উপজেলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বাঘাইছড়ি পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তা ঘাট নষ্ট হয়ে গেছে। এই রাস্তা ঘাট গুলো ঠিক করতে আমাদের অনেক বড়ো বাজেট দরকার হবে। সরকার যদি দ্রুত এই গ্রুলো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে বাঘাইছড়ি পৌরসভার মানুষ কষ্ট পাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলায় এবছরের বন্যায় মরাত্মক আকার ধারণ করেছে। গত কয়েক দিনের অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে উপজেলা প্রত্যেকটি ইউনিয়নের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার প্রায় ২ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বাঘাইছড়িতে রাঙামাটি জেলা পরিষদের অর্থায়নে চলমান বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ পানির তোরে ভেসে গেছে। এই প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন করতে আমাদেরকে নতুন করে চিন্তা করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, কাচালং নদী নয় রাঙামাটি জেলার চেঙ্গী, মাইনী, কর্ণফুলী সহ বেশ কয়েকটি নদী খননের প্রয়োজন।  তিনি বলেন নদী ড্রেজিং এর বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। তিনিও এই নদী গুলো ড্রেজিং করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। তবে কবে না নাগাদ এই নদী ড্রেজিং কাজ শুরু হবে তা সঠিক বলা যাচ্ছে না। নদী গুলো খনন করা না হলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। এরকম বন্যায় বারবার হবে এবং সাধারণ মানুষ কষ্ট পাবে।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions