শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪
রাঙামাটিতে বৌদ্ধ মৈত্রী সংঘের ২০ বছর পূর্তিতে গুনী ব্যক্তিদের সন্মাননা স্মারক প্রদান

পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রয়োজন : গৌতম দেওয়ান

প্রকাশঃ ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০৬:১৮:৫৫ | আপডেটঃ ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০৬:০৬:২২  |  ৫৮১৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির পার্বত্য জেলা বৌদ্ধ মৈত্রী সংঘের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার গুণী ব্যক্তিদের সন্মাননা, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে শ্রদ্ধাদান ও সংগঠনের সাধারন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শহরের মৈত্রী বিহার প্রাঙ্গনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান। রাঙামাটি পার্ব্য জেলা বৌদ্ধ মৈত্রী সংঘের সভাপতি ভূপেন্দ্র নাথ চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য অঞ্চল শাখার সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। বক্তব্যে রাখেন  বৌদ্ধ মৈত্রী সংঘের উপদেষ্টা কমোদ বিকাশ চাকমা, প্রমোদ রঞ্জন চাকমা, বিনোদ বিহারী চাকমা, সংগঠনের সহ-সভাপতি মায়াধন চাকমা, সাধারন সম্পাদক কিরণ বিকাশ চাকমা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বৌদ্ধ মৈত্রী সংঘের কার্যকরী কমিটির সদস্য সুনীল ময় চাকমা।

অনুষ্ঠনে সংগঠনের ২০ বছর উপলক্ষে অতিথিরা সংগঠনের ৬ জন উপদেষ্টা  ও গুনী ব্যক্তি কমোদ বিকাশ চাকমা, প্রমোদ রঞ্জন চাকমা, বিনোদ বিহারী চাকমা, ডাঃ সুব্রত চাকমা, ইন্দ্রনাথ চাকমা ও বুদ্ধজয় চাকমাকে সন্মাননা স্মারক তুলে দেন। এছাড়া  ৩টি বৌদ্ধ ধর্মীয় রাঙামাটির রাজবন বিহারের বিশ^ শান্তি প্যাগোডা নির্মানের লক্ষে ৫০ হাজার টাকা, ধনপাতা বন বিহারকে ১ লক্ষ এবং  চট্টগ্রামের খুলশিস্থ বিশ^ মৈত্রী বিহারকে ৫০ হাজার টাকার শ্রদ্ধা দান স্ব স্ব কর্তৃপক্ষের কাছে শ্রদ্ধা দান তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে সংগঠনের আজীবন সদস্য, সাধারন সদস্যরা ছাড়াও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য না থাকায় হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, সবচেয়ে বড় চিন্তিত তা হলো আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য নেই। ঐক্য জিনিসটা না থাকার কারণে আমরা যাই চিন্তা করি না কেন আমাদের মনে দুর্বলতা থেকে থাকে।  তবে যেভাবে চলছে তার আর সেভাবে চলতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, একসময় আমরা বড় ধরনের পরিস্থিতিতে সম্মুখীন হয়েছিলাম। তখন সশস্ত্র সংঘাতের মধ্য দিয়ে আমদের দিন অতিবাহিত করতে হয়েছিল। বহু সমস্যায় সম্মুখীন হতে হয়েছিল, আমাদেও বহুবার ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছিল এমনকি দেশও ত্যাগ করতে হয়েছিল। কিন্তু সে সময় একটা বড় সাহস ছিল একতা  ছিলাম। সেটা হচ্ছে বড় শক্তি।

তিনি বলেন, আমরা যতই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়না কেন একটা জিনিস দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের বুদ্ধ ধর্মেও প্রতিষ্ঠানগুলো আজও পর্ষন্ত দলমত নির্বিশেষে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মিলিত হতে পারছি।  এখানে দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা সমাজকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে একটা জাতিকে বাচাতে হলে তার সামাজিক,রাজনৈতিক সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন কিছু থাকার দরকার।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য বৌদ্ধ মৈত্রী সংঘ আজ ২০ বছর এগিয়ে গেছে তা কম নয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেই সুদুর ভারতের বুদ্ধ গয়াতে গিয়ে মন্দির প্রতিষ্ঠা, পরিচালনা করা এতো সহজ ব্যাপার না। কিন্তু তারা তা করে যাচ্ছে।  সমাজে যার যার অবস্থান থেকে থেকে পার্বত্য বৌদ্ধ মৈত্রী সংঘ থেকে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে শ্রদ্ধা দান দিচ্ছেন। যদিও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতা থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু দিতে পারছে তা কম কথা নয়। তা এক লাখ হোক দুই লাখ হোক। দিতে পারছে তার বড় কথা।

ধর্ম আসলে মনের মধ্যে বোধ থাকলে হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বুদ্ধ ধর্মকে বুঝতে হবে জানতে হবে। ধর্ম না বুঝলে ধর্মেও প্রতি আগ্রহ বাড়বে না। তবে জুম্ম সমাজের মধ্যে ধর্মেও প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে তরুনদের মধ্যে ধর্মেও প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে তাতে দেখলে উৎসাহিত বোধ করি।

তিনি পার্বত্য বৌদ্ধ মৈত্রী সংঘের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ২০ বছর ধরে এই সংগঠনটি পরিচালনা  করে আসছেন, আপনাদের অনেক অভিজ্ঞা  হয়েছে।  আমাদেও ধর্মেও জ্ঞান বাড়াতে হবে। তাই অন্যান্য সংগঠনের সাথে যৌথভাবে ধর্মীয় সভা দরকার। যদিও পার্বত্য চট্টগ্রামে বুদ্ধ ধর্মের জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বুদ্ধ ধর্মকে সেভাবে আমরা এগিয়ে নিতে পারছি না।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions