বৃহস্পতিবার | ২৮ মার্চ, ২০২৪

পাকুয়াখালীতে গণহত্যার শিকার নিহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিল

প্রকাশঃ ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১১:২৭:২২ | আপডেটঃ ২৮ মার্চ, ২০২৪ ০১:২৬:৫২  |  ১১১১
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পাকুয়াখালী গণহত্যায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় রাঙামাটি কোটর্  বিল্ডিং এলাকার কালেক্টর জামে মসজিদে বাদে আছর দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পার্বত্য অধিকার ফোরাম ও পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়।

কালেক্টর মসজিদের খতিব জনাব মাওলানা আব্দুল হাশেম হুজুর মিলাদ পড়ান ও নিহতদের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন।
এসময় সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব। এছাড়াও পার্বত্য অধিকার ফোরাম এবং বাঙালী ছাত্র পরিষদের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীবৃন্দ ও মসজিদের মুসল্লিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর সভাপতি  মোঃ নাজিম আল হাসান প্রেরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,  ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর অঙ্গ সংগঠন শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসীরা রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালিতে নিরীহ এবং নিরস্ত্র বাঙালি কাঠুরিয়াদের উপর নির্মম হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বীভৎস মানসিকতার এক জঘন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল।

স্বাধীনতার পর পরই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর অঙ্গ সংগঠন শান্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু করে। পাহাড়ের বাঙালীদের  শ্রমই ছিল তাদের জীবিকা নির্বাহের উপায়। রুজি রোজগারের সহজ বিকল্প কোন উপায় না থাকায় বনের গাছ, বাঁশ আহরণেই তারা বাধ্য ছিল। শান্তিবাহিনী মিটিং করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ডেকে নিয়ে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।
শান্তিবাহিনী সেদিন এতগুলো মানুষকে হত্যা করতে একটি বুলেটও ব্যবহার করেনি। ৩৫ টি মাথা একটি বস্তায় করে আনা হয়েছিল। একটি লাশেরও হাত সাথে ছিল না। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বেয়নেট ও অন্যান্য দেশিয় অস্ত্র দিয়ে খোঁচিয়ে খোঁচিয়ে নানা ভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল এই অসহায় মানুষ গুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকাতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তারা। এই বীভৎস লাশের করুন চিত্র, এখনো আমাদের হৃদয়কে নাড়া দেয়।

সেসময়ে পার্বত্য পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখার জন্য তৎকালিন সরকারের ৮জন প্রভাবশালী মন্ত্রী লংগদু গিয়েছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, শিল্প মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মদ, পানি সম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রী এমএমান্নান। তাঁরা লংগদু গিয়ে মানুষের বুক ফাটা কান্না আর আহাজারী দেখে হত্যাকারীদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোকে পুনর্বাসন করার, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সন্তানদের লেখা পড়ার দায়িত্ব নেয়ার প্রতিশ্রুতিও তারা দিয়েছিলেন।

সে সময় লংগদু থেকে ফিরে আসার পর তৎকালিন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সুলতান মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটি ৩১ অক্টোবর ৯৬ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions