শনিবার | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

রাঙামাটির রসালো লিচু বাজারে

প্রকাশঃ ১১ মে, ২০১৮ ০৩:২৪:০১ | আপডেটঃ ১৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০৬:৪০:৩২  |  ২১২৬
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির টসটসে রসালো লিচু এখন বাজারে। জেলায় এ বছরও লিচুর উচ্চফলন হয়েছে। পাহাড়ে উৎপাদন হচ্ছে বিদেশি জাতের হাইব্রিড লিচু। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় লিচুর আবাদ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।  
সূত্র জানিয়েছে, দেশি জাতের লিচুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাহাড়ে চাষাবাদ হচ্ছে বিদেশি জাতের হাইব্রিড লিচু। এরই মধ্যে বাজারে এসেছে বোম্বে জাতের লিচু। বাজারে আসতে শুরু করেছে চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচু। বাগানিরা জানান, পাহাড়ে মোজাফ্ফরি জাতের লিচু আবাদ হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। তিন পার্বত্য জেলায় উন্নত জাতের লিচুর উৎপাদন ও ফল যাচ্ছে প্রচুর।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কান্তি চাকমা জানান, এবার মৌসুমে রাঙামাটি জেলায় ব্যাপক লিচুর আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে চায়না-৩ ও চায়না-২ জাতের। ফলনও আসছে প্রচুর। তবে ঝড়বৃষ্টির কারণে অনেক লিচু নষ্ট হয়ে গেছে। রাঙামাটি জেলায় এবার লিচুর আবাদ হয়েছে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে। লিচুর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন।
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদেশি জাতের লিচু স্বাদে খুব মিষ্টি। পাহাড়ে চাষাবাদে উপযোগী। চায়না ও বোম্বে জাতের লিচুর চাহিদা বেশি। তাই এসব জাতের লিচু চাষাবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। এ ছাড়া তিন জাতের দেশি লিচু আবাদ হচ্ছে পাহাড়ে। ফলন ও উৎপাদনও প্রচুর। বর্তমানে স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে পাহাড়ের লিচু বাজারজাত হয়ে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বাইরের বিভিন্ন জেলায়।

চাষিরা জানান, বোম্বে লিচুর আবাদে পাহাড়ে উচ্চফলন পাওয়া যাচ্ছে। উচ্চফলন হওয়ায় পাহাড়ে অধিক চাষাবাদ হচ্ছে চায়না-২ ও চায়না-৩ জাতের লিচুর। চায়না-৩ আপেলের মতো গোলাকার। সাইজে বড়। এ জাতের লিচু পাকলে লাল রঙের হয়। স্বাদে মিষ্টি। চায়না-২ জাতের লিচুর আকৃতিও আপেলের মতোই। তবে সাইজে কিছুটা ছোট আর পাকলে জলপাই রঙের মতো থাকে। স্বাদে খুব মিষ্টি।
ব্যবসায়ীরা বলেন, কয়েক বছর আগেও এখানে লিচুর আমদানি করা হতো রাজশাহী, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা হতে। বর্তমানে পাহাড়ে উৎপাদিত লিচু বাজারজাত হয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

চাষিরা জানান, রাঙামাটিতে লিচুর আবাদে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করছেন বহু মানুষ। লিচুর বাম্পারফলন পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এক ধরনের মধ্যস্বত্ব ভোগীর কারণে বাগানিরা অনেক সময় ঠকছেন। রাঙামাটি সদরের বালুখালী, জীবতলী, মগবান, বন্দুকভাঙ্গা, সাপছড়ি, কুতুকছড়ি, কাপ্তাইয়ের নাভাঙ্গা, ওয়া¹া, বড়াদম, রাইখালীসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় লিচুর ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। বাম্পারফলন পাওয়া যাচ্ছে সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে। তিন পার্বত্য জেলায় কোথাও হিমাগার নেই। সঠিক সময়ে লিচু বিক্রি করতে না পারলে সংরক্ষণের কোনো সুযোগ থাকে না। ফলে অনেক সময় পানির দরে বিক্রি করতে হয় কষ্টে উৎপাদিত লিচু। সংরক্ষণের অভাবে প্রতি বছর রাঙামাটিসহ পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর লিচু নষ্ট হয়ে যায়।
 
বাজার দেখা গেছে, শহরসহ রাঙামাটির প্রতিটি হাটবাজারে লিচুর সমাহার। রাঙামাটি শহর এলাকাসহ স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিন বেচাকেনা হচ্ছে প্রচুর লিচু। স্থানীয় বাজারে প্রতিশত দেশি জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। আর চায়না জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। প্রচুর লিচু সরবরাহ হচ্ছে জেলার বাইরে।
 
অর্থনীতি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions