শনিবার | ২০ এপ্রিল, ২০২৪

অযত্ন অবহেলায় বান্দরবানে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক

প্রকাশঃ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০১:১৫:৪০ | আপডেটঃ ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৪:৫৭:৫৩  |  ৯৯৩
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবান জেলা শহরের বাসষ্ট্যান্ডে নিমির্তি মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলকটি অযতœ অবহেলায় পড়ে রয়েছে, যত্ন না নেয়ায় স্মৃতি ফলকের স্থানটি আবর্জনার স্তুুপে পরিনত হয়েছে,আর অযত্ন ও অবহেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের এই স্মৃতি ফলকের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে দিন দিন।
 
২০০৮ সালে ১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বান্দরবান সদরের বাসস্ট্যন্ডে শহীদদের সম্মানে নির্মাণ করা হয় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হলে ও এর রক্ষার্থে কোন সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হয়নি আজ ও। স্মৃতি ফলক প্রাঙ্গনটি পুরোটায় অরক্ষিত এবং উন্মুক্ত। স্মৃতি ফলকের বেদিতে স্থানীয় বাসিন্দার কাপড় চোপড় শুকাতে দেয় প্রতিদিন, আর শ্রমজীবি মানুষের আড্ডা বসে বেশিরভাগ। স্মৃতি ফলকের এক প্রান্তে রিক্সা এবং সিএনজির স্টেশান তৈরি হয়ে গেছে আর সামনে অংশে রয়েছে বিশাল গর্তে আবর্জনার স্তুুপ, আর প্রতিদিনই এখানে ফেলা হয় দুর্গন্ধযুক্ত আর্বজনা ও ময়লা। আর এসব আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো:কামাল পাশা বলেন, বান্দরবান জেলা শহরের বাসষ্ট্যান্ডে নিমির্তি মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলকটি অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে, কোন প্রকার তদারকি না করায় দিন দিন এই স্মৃতি ফলকটি মানুষের দখলে চলে যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো:জাহেদ বলেন,বান্দরবানে জেলা প্রশাসন,পার্বত্য জেলা পরিষদ,উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রশাসনীক অফিসের কার্যক্রম আমরা দেখতে পাই,কিন্তু দুঃখজনক হলে ও সত্যি মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত স্মৃতি ফলকের আমরা সঠিক সম্মান দিতে পারছি না।

সুত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ১৫ শতক জমির ওপরে স্মৃতি ফলকটি নির্মাণের পর কর্তৃপক্ষ এর সঠিক রক্ষণাবেক্ষন করছে না। সীমানা দেয়াল না থাকায় উন্মুক্ত স্মৃতি ফলকে যার যখন ইচ্ছা ঢুকে পড়ছে আর স্মৃতি ফলকে নানা ধরণের সরঞ্জাম রাখছে ও নানা কাজে ব্যবহার করছে যে কেউ, আর এতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অশ্রদ্ধা সৃষ্টি হচ্ছে নতুন প্রজন্মের, তাই কালক্ষেপন না করে দ্রুত এই্ স্মৃতি ফলকের উন্নয়ন ও সংস্কার ও সীমানা প্রাচীর নির্মান করে শহীদদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা প্রয়োজন বলে জানালেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও মুক্তিযোদ্ধারা।

বান্দরবানে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হাকিম চৌধুরী বলেন,আমরা দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম,আমাদের একটাই চাওয়া ছিল দেশের স্বাধীনতা অর্জন।কিন্তুু আফসোস দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যেসব সুর্য সন্তানেরা প্রাণ দিয়েছিল আজ তাদের নামে স্মৃতি ফলক নির্মাণ করে     যেন তেন ভাবে রেখেছে প্রশাসন। এই লজ্জা কার ?


বান্দরবান প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হক বলেন, প্রশাসনের উচিত শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে বান্দরবানের নির্মিত স্মৃতি ফলকের সঠিক পরিচর্যা করা। কালক্ষেপন না করে স্মৃতি ফলকের চারপাশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা ও যথাযথ দেখভাল করা।


এদিকে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলকটির সৌন্দর্যে শীঘ্রই বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে বলে আশ্বাস দিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তাকর্মকর্তা উ চিং মং । তিনি বলেন,দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবানে মুক্তিযদ্ধের শহীদদের জন্য নির্মিত স্মৃতি ফলকটি অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে,তবে উর্ধতন কর্তপক্ষের নির্দেশে আমরা শীঘ্রই এই স্মৃতি ফলকটির উন্নয়ন কাজ সম্প্রসারণ করবো।


স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, শুধু আশ্বাস নয় স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নির্মিত এই স্মৃতি ফলকের সংরক্ষন করে শহীদদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে প্রশাসনকে এখনই কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শুধু জাতীয় দিবস আসলে স্মৃতি ফলক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা আর সারা বছর নোংরা আর্বজনা করে স্মৃতি ফলক রাখা কোনভাবেই কাম্য নয় ।

 
বান্দরবান |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions